নিউজ ডেষ্ক- রংপুর অঞ্চলে বাড়ছে ধনিয়া পাতার চাষাবাদ। রংপুরের মাটি বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ যা ধনিয়া চাষের খুবেই উপযোগী। ফলে ফলনও ভালো পাওয়া যায়। রংপুরের বিস্তীর্ন মাঠে ধনিয়া পাতার গাছ সবুজ চাদরের মতো দেখা যায়। ধনিয়া পাতার ফলন ও দামে সবুজ এ পাতা চাষ করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন কৃষকরা।
জানা যায়, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় ধনিয়া পাতার চাষ হয়ে থাকে। শীত মৌসুমে এই সব অঞ্চলে এমন ধনিয়া পাতার খেত নজর কাড়ে। কৃষকরা বাড়ির উঠানে বা পরিত্যক্ত জমিতে আবাদ করতো। তবে এখন ফসলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। কম ধরচে অধিক লাভবান হওয়া যায় বলে কৃষকরা ধনিয়া পাতা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে কৃষাণ-কৃষাণীরা তাদের জমিতে ধনিয়া পাতা তোলাতে ব্যস্ত। সারিবদ্ধভাবে তোলা হচ্ছে ধনিয়া পাতা। সেগুলো নানা প্রক্রিয়ায় বাজারজাত করার প্রস্তুতি চলছে।
রানীপুকুর ইউনিয়নের মাদারপুরের কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, আগে আমরা ধান, আলু চাষ করতাম। সেগুলাতে বেশি লাভবান হতে পারি নাই। এখন ধনিয়া পাতার আবাদ করছি। ধনিয়া চাষে বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। আর অল্প খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়। তাই লোকসান নিয়ে চিন্তা করিনা। আল্লাহর রহমতে কয়েক বছর যাবত ধনিয়া চাষ করে লাভবান হতে পারছি।
পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের বগুড়াপাড়ার কৃষক আবু বক্কর বলেন, ধনিয়া পাতা উৎপাদনে ৩৫-৪০ দিনের মতো সময় লাগে। তারপর বাজারজাত করা যায়। কাঠাপ্রতি জমিতে ৩-৪ মণ ধনিয়া পাতার উৎপাদন হয়।
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার পাঙ্গা মটুকপুর ইউনিয়নের নদীয়াপাড়া এলাকার কৃষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, দিন দিন ধনিয়া পাতার চাষ বাড়ছে। চাষ বাড়লেও বিভিন্ন সময় পাইকাররা দাম কমিয়ে দেয় তখন লোকসান গুনতে হয়।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের বাগেরহাটের চাষি রুহুল বকস বলেন, খুচরা বাজারে ধনিয়া পাতার ভালো থাকলেও পাইকাররা হঠাৎ করেই দাম কমিয়ে দেয়। তখন আমাদের লোকসান হয়। বাজারের সঠিক নিয়ন্ত্রণ থাকলে আমরা কৃষকরা কখনো লোকসানের মুখে পড়তাম না।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, আগে শীতের সময় ধনিয়ার বেশি চাষ হলেও বর্তমান তা আগাম চাষ হচ্ছে। আগাম ধনিয়া বাজারে ভালো দাম থাকে। তখন কৃষকদের লাভ হয়। কিছুদিন আগে ২০০ টাকা কেজি ধনিয়া পাতা বিক্রি হলেও এখন তা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এমন দাম থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
তিনি আরো বলেন, এ বছর ৩৬০ হেক্টর জমিতে ধনিয়া পাতার আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে ৯৩১ মেট্রিক টন। কৃষকরা মোটামুটি দাম ভালো পাচ্ছেন।