নিউজ ডেষ্ক- বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার সবচেয়ে দ্রুততম যানের নাম হচ্ছে উড়োজাহাজ বা বিমান। শুধু দেশের বাইরেই নয় দেশের ভেতরেও এখন কোথাও অল্প সময়ে যাওয়ার জন্য সবার প্রথম পছন্দ হচ্চে বিমান।
তবে এর আবিষ্কারক দুই ভায়ের কথা নিশ্চয়ই আপনার জানার কথা। রাইট ব্রাদার্স উইলবার রাইট এবং তার ভাই অরভিল রাইট প্রথম উড়োজাহাজ আবিষ্কার করেন।
তারা ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম নিয়ন্ত্রিত, শক্তিসম্পন্ন এবং বাতাসের চেয়ে ভারী সুস্থিত মানুষ-বহনযোগ্য উড়োজাহাজ তৈরি করতে সক্ষম হন। তাই ১৭ ডিসেম্বর উদযাপন করা হয় রাইট ব্রাদার্স দিবস হিসেবে।
অরভিল রাইট ১৮৭১ সালের ১৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে উইলবার রাইট ১৮৬৭ সালের ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। আর দুজনেই পেশায় ছিলেন মার্কিন প্রকৌশলী। অন্যদিকে তাদের পিতা মিল্টন রাইট ছিলেন গির্জার যাজক।
একদিন তিনি তার দুই ছেলেকে একটি খেলনা হেলিকপ্টার উপহার দেন। আর সেটির নকশা করেছিলেন হেলিকপ্টার উদ্ভাবক ফ্রান্সের আলফোন্স পে। সেটি দেখে তারা দুই ভাই নতুন একটি হেলিকপ্টার তৈরি করেন।
এটি তৈরীর জন্য দুই ভাই সংগ্রহ করেন স্যার জর্জ কেইলি, চানিউট, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি এবং ল্যাংলির এরোনেটিক সংক্রান্ত গবেষণার তথ্যাদি। ১৮৯৬ এবং ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত বিমান তৈরির ওপর যত প্রকাশনা ছিলো সবকিছু তারা সংগ্রহ করে মনোযোগ দিয়ে পড়েন।
কেননা একই সময়ে তাদের মতো অনেকেই উড়োজাহাজ তৈরির চেষ্টা করছিল। কিন্তু কেউই সেভাবে সফল হতে পারেনি। তাদের দেখানো পথ ধরেই এবার রাইট ভাতৃদ্বয় শুরু করেন তাদের গবেষণা।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে উইলবার পাঁচ ফুট উচ্চতার একটি বাক্স ঘুড়ি তৈরী করে সেটাতে পাখা বেঁধে ওড়ার চেষ্টা করেন। আর পরের বছরই তারা গ্লাইডার তৈরি করেন। পরবর্তীতে এটিকে ওড়ানোর জন্য আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনার কিটি হকে নিয়ে আসা হয়। যদিও উড্ডয়নটি মাত্র ১২ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। তাতে অবশ্য তারা পিঁছু হাটেননি। এরপর ১৯০১ এবং ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে পরপর দুটি পরীক্ষা করতে সক্ষম হন।
তৃতীয়বার তারা নিজেদের উদ্ভাবিত যন্ত্র ব্যবহার করে কিছুটা সাফল্যের দেখা পান। প্রায় ১০০০ বার এটি আকাশে ওড়ানো হয়। তারা এটির নাম দেন ‘Flyer-1’. ১৯০৩-এর ২৩ মার্চ রাইট ভ্রাতৃদ্বয় উড্ডয়নকৃত গ্লাইডারের প্যাটেন্ট লাভের জন্য একটি আবেদন করেন।
এরপর দুই ভাই তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম অব্যাহত রেখে ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে তৈরি করেন Flyer-111। এটিতে তারা ১০৫ বার আকাশে উড্ডয়ন করেন। আর এ ঘটনা পৃথিবীর সব গণমাধ্যম বিশেষ করে আমেরিকার বিখ্যাত ‘হেরল্ড ট্রিবিউন’ পত্রিকায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়।