দিনাজপুরে সাড়া ফেলেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নান্দনিক ছাদবাগান

উদ্দোক্তা ও সাফল্যের গল্প

নিউজ ডেষ্ক- দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত কাচিনীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাফিউল ইসলামের নান্দনিক ছাদবাগান এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। এ বিদ্যালয়ের ছাদে গেলেই চোখে পড়ে সারি সারি ফুল ও ফলগাছ। গাছে গাছে ফুটে আছে লাল, হলুদ, সাদাসহ নানা রঙের অসংখ্য ফুল। শুধু ছাদেই নয়, পুরো বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে অসংখ্য ফুল ও ফলের গাছ। এ স্কুলের ছাদে বাগান দেখে অনেক স্কুল ও প্রতিষ্ঠান ছাদ বাগানে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, গেট থেকে শুরু করে বিদ্যালয় ভবনের সামনে, বারান্দায় টবে ঝুলন্ত ও ছাদে নানা প্রজাতির ফুল ও ফলগাছ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডালিম, জামরুল, লেবু, পেয়ারা, পেঁপে, আম, আমড়াসহ নানা ফলের গাছ। আর ফুলের মধ্যে রয়েছে পারুল, গোলাপ, টগর, বেলি, বিল্ডিং হার্টস, অগ্নিশ্বর, তুলসী, গন্ধরাজ, মেহেদি, এরিকা পাম্প, চেরি, কাঁটা মুকুটসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল ও পাতাবাহারসহ নাম না জানা আরো অনেক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খানসামা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের ছাদে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলামের হাতে গড়া ছাদবাগান দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ে বাগান করা শুরু করেন এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাফিউল ইসলাম। প্রথমে বিদ্যালয়ের চারপাশে গড়ে তোলেন ফুল ও ফলের বাগান। পরে টব কিনে ছাদে রোপণ শুরু করেন ফুল ও ফলের গাছ। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বারান্দায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফুলের টব টানানো রয়েছে। এ ছাড়া আছে সমৃদ্ধি লাইব্রেরির সাথে বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেল কর্নার। এ উপজেলার ১৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে একমাত্র আইসিটি ক্লাসরুম রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। স্কুলটিতে লেখাপাড়ার মানও অনেক উন্নত। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বেশ কয়েকবার উপজেলার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।

এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাফিউল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের ফুল ও ফলের সাথে পরিচিত এবং বিদ্যালয়কে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে ফুল ও ফলের গাছে সবুজের সমারোহ করার চেষ্টা করেছি। অনেক সময় নিজেকে ক্লান্ত মনে হলে বাগানে এলে তা দূর হয়। বাগানের দেখভাল ও পরিচর্যা আমরা সব শিক্ষকরা মিলে করি। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে গিয়ে নিজ বাড়িতে লাগাচ্ছে। এলাকার মানুষজন ও অভিভাবকেরা বিভিন্ন সময়ে স্কুলের ছাদে এসে বাগান দেখে সময় কাটায় বলেও তিনি জানান।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এস. এম. এ মান্নান বলেন, বিদ্যালয়ে ছাদবাগান করে প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয় কাজ করেছেন প্রধান শিক্ষক। বাগানটি যতবারই দেখি আমি অভিভূত হয়ে যাই। এ রকম বাগান করার জন্য সব প্রধান শিক্ষককে বলে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ এরশাদুল হক চৌধুরী বলেন, আমি যোগদানের পর হতেই যত গুলো প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি এর মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক একজন সৃজনশীল মানুষ। তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের পরিবেশটি সবুজময় করে গড়ে তোলে শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে পাঠদান করাচ্ছে। যা নিঃসন্দেহে একটি ভাল কাজ। এধরনের উদ্যোগ গ্রহণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *