নিউজ ডেষ্ক-কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বাণিজ্যিকভাবে দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের কমলার চাষ করে কৃষক আবু বকর সিদ্দিক সফল হয়েছেন। এই উপজেলার মাটি কমলা চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলন বেশি পাওয়া যায়। বর্তমানে আমাদের দেশে কমলার ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাজারদর ভালো পাওয়া যায়। ফলে চাষিরা কমলা চাষে লাভবান হতে পারেন। আবু বকর সিদ্দিকের সাফল্য দেখে অনেকেই তার কাছ থেকে কমলা চাষের পদ্ধতি ও পরামর্শ নিতে আসেন।
জানা যায়, আবু বকর সিদ্দিক ৪ বছর আগে যশোর জেলার মহেশ গ্রামের একজনের নার্সারি ও কমলার বাগান দেখে কমলা চাষে আগ্রহী হন। তার সেই নার্সারি থেকে ২১০টি দার্জিলিং সাদকি জাতের চারা সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন। কমলা রোপণের শুরুর দিকে স্থানীয়সহ অনেকের বিরূপ মন্তব্য থাকলেও বর্তমানে তার কমলা চাষের সাফল্য দেখে এখন কমলা চাষ করার জন্য স্থানীয়সহ অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বাগানের প্রতিটি গাছে গাছে কাঁচা সবুজ ও হলুদ কমলা ঝুলে আছে। বিভিন্ন আকারের কমলার ভারে নুয়ে পড়া ডালগুলো বাঁশের ‘ঠেকা’ দিয়ে উঁচু করে দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং সাদকি জাতের এ ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা। আবু বকর সিদ্দিকের কমলার বাগানে থোকায় থোকায় কমলা দেখে অনেকেই মুগ্ধ হচ্ছে এবং এত সুন্দর বাগান করায় কৃষক আবু বক্কর প্রশাংসায়ও পাচ্ছেন।
কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমি ৪ বছর আগে যশোর জেলার মহেশ গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাই। সেখানে আশরাফুল আলম নামের একজনের নার্সারি ও তার কমলার বাগান দেখে মুগ্ধ হই। তারপর কমলা চাষ করতে আগ্রহী হই। আশরাফুল আলমের কাছ থেকে কমলা চাষের পরামর্শে ও দার্জিলিং সাদকি জাতের ২১০টি চারা সংগ্রহ করে নিয়ে আসি।
তিনি আরো বলেন, ২১০টি চারা সংগ্রহ করে আমার ৩০ শতক জমিতে ১০ ফুট দূরত্ব রেখে চারা রোপন করি। চারা রোপনের পর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৩৫ টি গাছ রক্ষা করতে পারি। এখন প্রতিটি গাছে ৭০ থেকে ১০০’র বেশি ফল ধরেছে। প্রতিদিন কমলার বাগানে পাকা কমলার স্বাদ নিতে স্থানীয়রাও আসেন। চারা রোপনের ২৮ মাস পর গাছে ফল আসা শুরু করে।
আবু বকর সিদ্দিক আরো বলেন, এখন আমার বাগানের পরিধি আরো বেড়েছে। এখন দুই বিঘা জমিতে বাগান করেছি। সব মিলিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাগানে যা কমলা আছে তা বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকা লাভ হবে।
স্থানীয় মুসা মিয়া ও জাহের আলী জানান, আবু বকর সিদ্দিক কমলা চাষে সাফল্য অর্জন করে এ অঞ্চলের মধ্যে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাগান দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই বাগান শুরু করেছেন। কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কৃষক আবু বকর সিদ্দিক কমলার চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এ উপজেলার মাটি লেবু জাতীয় ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তার কমলার বাগান দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি। তার বাগানের কমলা গাছে প্রচুর পরিমানে কমলা ধরেছে। কমলার চাহিদা ও বাজারদর ভালো থাকায় আবু বকর সিদ্দিক লাভবান হবেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।