নিউজ ডেষ্ক- নাটোরের গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলায় কলা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। অল্প খরচে লাভ বেশি হওয়ায় খুশি চাষিরা। অনেক কৃষকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে রয়েছে কলা চাষ। শুধু জৈব সার ব্যবহার করে কলা চাষ করা যায়। তাই খরচ কম হয়। আর বাজারে কলার ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
জানা যায়, গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুরে শুক্র ও শনিবার বাদে সপ্তাহে ৫ দিন কলার হাট বসে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কলা ছোট ভ্যান, ট্রলি, নছিমন-করিমনে করে নিয়ে আসেন হাটে। দূর-দূরান্তের পাইকাররা এই হাটে আসেন কলা কিনে নিতে। এই হাটের পাশে সারি সারি দাড়িয়ে থাকে কলাবাহী ট্রাক। এখানকার কলা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় বিভিন্ন জেলা, উপজেলায়।
গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কলাচাষী মো. আমিনুল ইসলাম লিটন বলেন, আমার ৩০ বিঘার একটি পুকুর আছে। সেই পুকুরের পাড়ে কলা গাছ লাগিয়েছি। একবার কলা গাছ লাগানোর পর এর থেকে ৩-৪ মৌসুম কলা পাওয়া যায়। এবছর খরচ বাদে কলাতে প্রায় ৪ লাখ টাকা লাভ হয়েছে।
শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারী কলেজের প্রভাষক কৃষিবিদ জহুরুল হক সরকার বলেন, আমি আমার ১ একর জমিতে কলা চাষ করেছি। এই এলাকার মাটি অত্যন্ত উর্বর। কলা চাষে ভালো ফলন পেয়েছি। বিঘাপ্রতি ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার কলা বিক্রি করেছি।
সফল কলা চাষী মান্নান সরকার বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলা চাষে লাভ বেশি এবং খরচ কম। জৈব সার ব্যবহার করার কারণে এখানে ফলন ভালো হয়। আমি ৫ বছর যাবত কলাচাষ করছি। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে সাগর কলা, অমৃত সাগর, মেহর সাগরসহ বিভিন জাতের চারা রোপণ করেছিলাম। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০০-৪০০ চারা রোপণ করা যায়। বছর খানেকের মধ্যেই রোপণকৃত গাছ থেকে কলা পাওয়া যায়। আমার কলাচাষে সফলতা দেখে এলাকার কৃষকরা কলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
নাজিরপুর হাট ইজারাদার নজরুল ইসলাম বলেন, গুরুদাসপুর উপজেলার প্রায় সব গ্রামেই কলার চাষ হয়। চাষিরা এই হাটে তাদের উৎপাদিত কলা বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। প্রতি কাইন কলা আকার ভেদে ৩০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এহাটে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক কলা দেশের নানা প্রান্তে যাচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে কলা চাষ হয়েছে। আমরা কলা চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগীতা করছি।