দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন কন্ডিশনে জয়ের অসাধারণ সেঞ্চুরি

খেলা

নিউজ ডেষ্ক- টপ অর্ডার কিংবা স্বীকৃতি ব্যাটাররা যখন মুখ থুবড়ে পড়লেন। দলের অবস্থা যখন করুণ। ঠিক তখনই ধারার বিপরীতে গিয়ে মাহমুদুল হাসান জয় দেখালেন টেস্টে ব্যাট করতে হয় কীভাবে! প্রচণ্ড ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে, ঠাণ্ডা মাথায় সময়ের দাবি মিটিয়ে চমৎকার ব্যাটিংয়ের ‍পেলেন পুরস্কার।

দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন কন্ডিশনেই জয় টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে। আজ (শনিবার) ডারবান টেস্টের তৃতীয় দিনে নেমেছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রকা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৩৬ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করেছে ৩৬৭ রান।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় একা হাতে লড়ে গেছেন জয়। দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে অভিজ্ঞ ব্যাটাররা ফিরে গেলেও জয় একপ্রান্ত আগলে রেখে পথ দেখাচ্ছিলেন বাংলাদেশকে। আর আজ তৃতীয় দিনে ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি বুঝে সিঙ্গেলস যেমন নিয়েছেন, তেমনি বাজে বলকে করেছেন বাউন্ডারি ছাড়া। সত্যিকার টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে ২৬৯ বলে পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে এই ওপেনার মেরেছেন ১০ বাউন্ডারির সঙ্গে এক ছক্কা।

টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিটি উইকেট অমূল্য। আর সেই উইকেট যদি হেলায় হারানো যায়, তাহলে এর চেয়ে বেশি কষ্টের আর হতে পারে না। বিশেষ করে, উইকেট পড়ে যখন রান আউট হয়ে। টেস্ট ক্রিকেটে আসলে রান আউট মেনেই নেওয়া যায় না! ইয়াসির আলী সেই কাজটিই করলেন। রান আউটে কাটা পড়েছেন তিনি।

লাঞ্চের আগের সময়টা দারুণ খেলছিলেন লিটন দাস। কিন্তু প্রথম সেশনের বিরতির পর মাঠে ফিরতেই খেই হারালেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। লাঞ্চ থেকে ফিরে দ্বিতীয় বলেই আউট হয়ে গেছেন তিনি।

টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ সময় কাটাচ্ছেন লিটন। লাল বলের ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করা এই ব্যাটার ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে জ্বলে উঠেছিলেন। চাপের মধ্যে ক্রিজে এসে চমৎকার ব্যাটিংয়ে হাঁটছিলেন হাফসেঞ্চুরির দিকে। তবে মাইলফলকটি ছোঁয়া হয়নি। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি থেকে ফিরেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় তার।

লিজাড উইলিয়ামসের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন লিটন। ফলে ৪১ রানে থামেন এই উইকেটকিপার। ৯২ বলের ইনিংসটি লিটন সাজান ৬ বাউন্ডারিতে। ফেরার আগে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে গড়ে যান ৮২ রানের জুটি।

ডারবান টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনটা দারুণ কাটলো বাংলাদেশের। শুধুমাত্র তাসকিন আহমেদের উইকেটটি ছাড়া সবকিছুই ছিল সফরকারীদের। মাহমুদুল হাসান জয় ও লিটন দাসের চমৎকার ব্যাটিংয়ে লাঞ্চের আগের সময়টা নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে আউট হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। ওই অবস্থায় বিশেষজ্ঞ ব্যাটারকে না পাঠিয়ে নামানো হয়েছিল নাইটওয়াচম্যান তাসকিন আহমেদকে। মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গে করে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিলেন তিনি। যদিও বেশিদূর যেতে পারেননি তাসকিন।

দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের হারানো ৪ উইকেটের সবক’টি নিয়েছিলেন সিমন হারমার। তবে তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের হারানো প্রথম উইকেটটি এই স্পিনারের নয়। লিজাড উইলিয়ামসের শিকার হয়েছেন তাসকিন। এই পেসারের বলে উইয়ান মুল্ডারের হাতে ধরা পড়েছেন তিনি। ফেরার আগে তাসকিন ১০ বলে করেন ১ রান। তাসকিন দ্রুত ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেছেন জয় ও লিটন দাস। তাদের ব্যাটে এগিয়ে চলেছে সফরকারীরা। জয় তুলে নিয়েছেন তার টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। ১৭০ বলে ফিফটি পূরণ করেন এই ওপেনার। এখন হাঁটছেন সেঞ্চুরির পথে। লাঞ্চ বিরতির আগে জয় অপরাজিত ৮০ রানে। তাকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া লিটন ছিলেন ৪১ রানে অপরাজিত। ষষ্ঠ উইকেটে তারা অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ৮২ রানে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *