নিউজ ডেষ্ক-টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুরমাসহ সিলেটের প্রধান প্রধান নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি সিলেট নগরীর ভেতরে ঢুকে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত করেছে।
পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে নগরীর রাস্তাগুলো। পরিস্থিতি এমন যে, অনেক এলাকায় মানুষ নৌকায় চলাচল করছে। পানি ঢুকে পড়েছে সিলেটের বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও। সার্বিক অবস্থা দাঁড়িয়েছে, সিলেট জেলার ৬ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা পানিতে ভাসছেন তিন দিন ধরে।
বন্যার অবনতি হয়েছে সিলেট সদর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলায়। সিলেট নগরীর নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় এবং সুরমার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নগরীতে ১৬টি ও অন্য জায়গায় ১৯৯টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
ওদিকে সুনামগঞ্জ জেলার গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক সড়কে পানি ওঠায় ছাতকের সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জেলা শহরের সঙ্গে ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ইরি ও বোরো ধান। এ ছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় বাদাম ও সবজি বিনষ্ট হয়েছে পানিতে তলিয়ে।
রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠলে সেগুলোয় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। ওদিকে বরিশালেও চার নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙনের আশঙ্কা। উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাসও দিয়েছে পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বন্যায় শুধু মানুষই পানিবন্দি হয়ে পড়েনি, ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ফসলের, বিশেষত ইরি ও বোরো ধানের। আমাদের কথা হলো, শুধু আশ্রয়কেন্দ্র খুললে হবে না, বন্যার্তদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রীর। দ্বিতীয়ত, বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনের কাজটিও করতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে।
বন্যার্তদের মধ্যে যাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাদের জন্য থাকতে হবে বিশেষ ঋণ সুবিধা। বরিশালের চার নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে ভাঙনের যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, সে ব্যাপারেও নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।
ওদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, সে ব্যাপারেও থাকতে হবে পূর্বপ্রস্তুতি। সবটা মিলে সরকারের উচিত হবে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় সর্বদিকবিস্তৃত দৃষ্টি দেওয়া।