নিউজ ডেষ্ক- বিল দিতে না পারায় চিকিৎসাধীন দুই যমজ শিশুকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে শিশু দুটিকে চিকিৎসার জন্যে অন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত ‘আমার বাংলাদেশ হসপিটাল’-এ। যদিও কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অস্বীকার করেছে। মারা যাওয়া ছয় মাসের ওই শিশুর নাম হচ্ছে আহমেদ। অসুস্থ আরেক শিশু আব্দুল্লাহ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে। তাদের গ্রামের বাড়ি হচ্ছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। বর্তমানে তারা সাভার রেডিও কলোনিতে বসবাস করেন। শিশুদের বাবা মো. জামাল একজন সৌদি প্রবাসী।
আর এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের মালিককে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে।
শিশু দুটির মা আয়েশা বেগম জানান, “ঠান্ডা ও জ্বরের কারণে আমার যমজ সন্তান আব্দুল্লাহ ও আহমেদকে গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করি। কোনো উন্নতি না হওয়ায় ২ জানুয়ারি সেখান অ্যাম্বুলেন্সে করে সাভার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা রওনা দেই। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স চালক আমাকে বলেন- শিশু দুটি তো খুবই অসুস্থ, সামনে একটা ক্লিনিক আছে সেখানে নিয়ে যান। সেখানে কম খরচে চিকিৎসা পাওয়া যাবে। তার কথা মতো শিশু দুটিকে আমরা নিয়ে যাই ‘আমার বাংলাদেশ হসপিটালে’। আর সেখানে শিশুদের চিকিৎসা চলতে থাকে।”
আয়েশা বেগম জানান, “তিন দিন পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের বিল দেখায় এক লাখ ২৬ হাজার টাকা। আর ওই টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে এত টাকা কোথা থেকে দেব বললে তারা আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে।”
তিনি আরও বলেন, “এর একদিন পরই দেড় লাখ টাকা বিল দেখানো হয়েছে। পরে ৪০ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করেছি। বৃহস্পতিবার তারা পুরো বিল দেওয়ার জন্য আবার আমাদের চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে আমার শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। আমার যমজ দুই শিশুকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে ঢাকা মেডিকেল নেওয়ার পথে আহমেদ রাস্তায় মারা যায়।”
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার এএসআই আশরাফুজ্জামান বলেন, “বুধবার ওই যমজ শিশু দুটির মা থানায় গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করার পর আমরা ওই হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি তিনি কোনো টাকা দিতে পারেননি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করে আসি মানবিক দিক বিবেচনা করে যেন ব্যবস্থা নেয়।”