ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছিলেন শুটার মাসুদ, চমকপ্রদ তথ্য দিলেন মা ও স্ত্রী

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক- শত শত মানুষের ভিড়ে রাজধানীর শাহজাহানপুরের জোড়া খুনের শুটার কে এই মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক কর্মকর্তার কাছে জানা গেছে শুটার মাসুমের চমকপ্রদ কিছু তথ্য।

জানা গেছে, ছেলেবেলায় দারুণ মেধাবী ছিলেন তিনি। মাসুমের বাবা ছিলেন রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার একটি স্কুলের শিক্ষক। মা গৃহিনী। তিন-ভাইবোনের মধ্যে মাসুম দ্বিতীয়। রাজধানীর পশ্চিম মাদারটেক এলাকায়

তাদের পরিবারকে সবাই শিক্ষিত ও ভদ্র বলেই জানে। মাসুমের একাধিক পরিবেশীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ১৫ বছর আগে হঠাৎ মাসুমকে বাসা থেকে বের করে দেন তার বাবা। মাসুমের মা জানান, মাসুম তখন ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছিলেন।

রাতদিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে শুরু হয় মনোমালিন্য। শাসন-বারণ, অনুনয় সব যখন ব্যর্থ হলো তখন মনের কষ্টে মাসুমকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তার বাবা। সেই যে মাসুম বাড়ি থেকে বের হলেন আর ফিরে আসেননি।

এরপর কেটে গেছে একে একে প্রায় ১৫ বছর। এরমধ্যে তিনি আর বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। বিয়ে করেছেন, সংসারে এসেছে সন্তান। তিনি আরও বলেন, মাসুমের বিয়ের খবর আমরা জেনেছি লোকমুখে। তার ছেলে না মেয়ে হয়েছে সেটাও আমরা জানি না।

পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর মাসুম হতাশায় ভুগছিলেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবারের লোকেরা। কিন্তু মাসুম যে টাকার বিনিময়ে কাউকে গুলি করে হত্যা করার মতো মানসিক অবস্থায় চলে যেতে পারেন তা ভাবতে পারছেন না তারা।

এদিকে মাসুমের স্ত্রী দীনা পুলিশকে জানিয়েছেন, স্বামীর সঙ্গে তিন মাস ধরে তার বনিবনা কম ছিল। তাই বাসা ছেড়ে গোড়ানে বাড়িতে এসে থাকছেন। ঢাকা মহানগর ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শাহজাহানপুরে জোড়া খুনের আগে আকাশের নামে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় মোট ৪টি মামলা ছিল। শুধুই আর্থিক সুবিধার জন্য নয়, মাসুমকে সেসব মামলা থেকে অব্যাহতি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে এই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত করা হয়।

তবে কারা তাকে ভাড়া করেছিল তদন্তের স্বার্থে তা জানায়নি ডিবি। ঘটনার তিনদিন আগে অপরিচিত একজন এসে মাসুম ও তার সহযোগীকে মোটরসাইকেল ও অস্ত্র দিয়ে যায়। ২৩ মার্চ মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাসুম। তবে তা ব্যর্থ হয়।শাহজানপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে জাহিদুল মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে ১২ রাউন্ড গুলি করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জাহিদুল। তার গাড়িচালক মনির হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশ দিয়ে রিকশায় যাচ্ছিলেন বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি। তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *