নিউজ ডেষ্ক– ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলোচিত কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা একেএম মমিনুল হক সাঈদের ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ওমানে ৭৮ লাখ টাকা পাচারে তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক লোকমান হোসেন ভ‚ঁইয়ার ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে দুদক। গতকাল সোমবার তাদের দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জশিট) দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুদক। শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর মমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এতে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে মামলার প্রতিবেদন
দাখিল করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার। কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয়।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে একেএম মমিনুল হক সাঈদ সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে দেশের টাকা বাইরে পাচার করেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ক্যাসিনো সাঈদ বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। ফেরার পার্ক এলাকার অভিজাত সিটি স্কয়ার রেসিডেন্সে বসবাস করছেন। সাঈদের উত্থান হয় রাজধানীর মতিঝিলে। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন তিনি। বঙ্গভবন কলোনিতে বেড়ে ওঠা সাঈদ ২০১৫ সালে ওই এলাকার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ঢাকার ক্যাসিনো বাণিজ্যের হোতাদের অন্যতম তিনি।
এদিকে লোকমান হোসেন ভ‚ঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রায় ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকার বেশি অর্থ অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুদক। গতকাল সোমবার এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুদকের তথ্যমতে, ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লোকমান হোসেন ভ‚ঁইয়ার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর মামলা করে দুদক। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, লোকমান হোসেন ভ‚ঁইয়া বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহিভর্‚ত অবৈধ সম্পদ অর্জন করে নিজ ভোগ-দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী নাবিলা লোকমান ও ছেলে লাবিব জুহায়ের হোসেনের নামে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রæপ (এএনজেড), কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়া (সিবিএ) ও জেস্ ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংক লিমিটেড (এনএবি) নামীয় ৩টি ব্যাংকের ৭টি হিসাবে অস্ট্রেলিয়া ও দুবাই থেকে প্রায় ১ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার নগদে ও ট্রান্সফারের মাধ্যমে জমা করেন। তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তির নামে বাংলাদেশি টাকায় ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮০ টাকা পাচার করেছেন।
এ বিষয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে কমিশন থেকে চার্জশিট দাখিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তা আদালতে দাখিল করা হবে।