গাড়ল পালনে ঝুঁকছেন প্রবাস ফেরত উদ্যোক্তারা, বছরে আয় ৩ লাখ

Uncategorized

নিউজ ডেষ্ক- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার জিহাদ আলী। বিদেশ ছিলেন কয়েক বছর। দেশে ফিরে শুরু করেন গাড়ল পালন। শুধু জিহাদ একা নন, বর্তমানে স্বল্প সময়ে বেশি আয়ের গাড়ল পালনে ঝুঁকছেন বিদেশ ফেরত ও স্থানীয় উদ্যোক্তারা।

জিহাদ বলেন, যখন আমি বিদেশ ছিলাম তখন ইউটিউবে দেখতাম ভেড়া পালন কিভাবে করতে হয়। তারপর আমি দেশে এসে ইউটিউব দেখে ভেড়া পালন শুরু করি। এখন আমি ভেড়া পালন করে অনেক কিছু করতে পেরেছি। আমার নিজের আম বাগানে গড়ে তুলেছি গাড়ল খামার। কিন্তু গাড়লের একটা ভালো দিক হচ্ছে, এরা মাটিতে যা পায় তাই খায়। উপরে মুখ করে না। তাই আম বাগানেই গাড়ল খামার বানিয়েছি।

উদ্যোক্তাদের দাবি, গাড়ল পালনে খরচ কম আর এ লাভ বেশি। এরই মধ্যে গাড়ল পালনে অনেকেই সফলতা পেয়েছেন। কেউ কেউ আবার এ গাড়ল পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নও দেখছেন। গাড়ল খামারিরা বলছেন, প্রাকৃতিক খাবারেই গাড়ল পালন করে স্বল্প খরচে অধিক লাভ হয়।

গাড়ল খামারি শীষ মোহাম্মদ বলেন, আমার সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। তাই গত ৫ বছর আগে গাড়ল পালন শুরু করি। প্রথমে ২৮টি মা গাড়ল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় কিনে বাড়িতে পালন করতে থাকি। এখন আমার খামারে ১০০টির বেশি গাড়ল রয়েছে। অনেকগুলো বিক্রিও করেছি। এ গাড়ল বিক্রির জন্য হাটে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে খামারিরা এসে আমার কাছে থেকে গাড়ল কিনে নিয়ে যায়। এখন আমার গাড়ল পালন করে বছরে ৩ লাখ টাকা আয় হয়।

তিনি আরও বলেন, গাড়লের মাংস অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণেও বেশ ভালো। দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়লের মাংসের ব্যাপক চাহিদা। আমাদের স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মাংস ৭০০-৮০০ কেজি ধরে বিক্রি হয়। আর মাঠে ছেড়ে দিয়ে প্রাকৃতিক খাবার ঘাস ও লতাপাতা থেকেই গাড়ল পালন করা সম্ভব। তবে সারাদিন মাঠের লতাপাতা খাওয়ানোর পরে সন্ধ্যায় কিছু শুকনো খাবার আমরা দিয়ে থাকি। গাড়ল প্রতি বছর দুটি করে বাচ্চা দেয়। গাড়ল পালন করেই আমার সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরেছে।

এবিষয়ে জানতে গোমস্তাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাওসার আলী বলেন, গাড়ল পালন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে উপজেলায় মোট গাড়ল খামার আছে ৪৮টি। এর মধ্যে নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা ২৬টি।

তিনি আরো বলেন, গাড়ল ভেড়ার একটি উন্নত জাত। অন্য গৃহপালিত প্রাণির চেয়ে গাড়লের রোগবালাই কম হয়। গাড়লের মাংস দ্রুত বৃদ্ধি হয়। লাভজনক হওয়ায় গাড়ল পালনে অনেকে এগিয়ে আসছেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে গাড়ল প্রজাতির ভেড়া পালনে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শসহ দেওয়া হচ্ছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *