নিউজ ডেষ্ক- সততা, পরিশ্রম ও একনিষ্ঠতার সাথে ফল চাষে বদলে গেছে জয়নালের জীবন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ফল চাষে বছরে প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। ফল চাষে সফলতা পাওয়ায় এলাকায় বেশ সুনাম আছে তার। তাকে দেখে অনেকেই ফল চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
জানা যায়, ফলচাষি আক্তারুজ্জামান ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাথানগাছি গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি ৫০ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ড্রাগন, মাল্টা ও ছাতকি কমলার চাষ করে কোটি টাকার ফল বিক্রি করেছেন। এই সব ফলের পাশাপাশি তিনি লেবু, পেঁপে, কলা, পেয়ারাও চাষ করেন।
আক্তারুজ্জামান বলেন, লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়ার পর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১০ সালে ঋণ নিয়ে বাগান শুরু করি। তারপর আক্তারুজ্জামান এগ্রো ফার্ম গড়ে তুলি। ১৫ বিঘা জমিতে পেঁপে আর কলা চাষ দিয়ে শুরু করি। সাথে ১২ বিঘা জমিতে কুলও চাষ করি। তারপর ২০১৬ সালে পেয়ারার চারা সংগ্রহ করে তা ৫০ বিঘা জমিতে রোপন করি। এই একই বছর আরো ২০ বিঘা জমিতে মাল্টা ও ১০ বিঘায় ছাতকি কমলার সমন্বিত চাষ শুরু করি। তার পরের বছর পেয়ারার বাগানে ড্রাগনের চাষও শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, চারা রোপণের পর ড্রাগনের ফল আসতে ১৮ মাস সময় লাগে। ড্রাগনের প্রতি খুটিতে খরচ হয় এক হাজার টাকা। এক বছরে একটি গাছ থেকে গড়ে ২৫-৩০ কেজি ফল পাওয়া যায়। ফুল আসার ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে ড্রাগন ফল বাজারে বিক্রি করা যায়। এই ফল উৎপাদনে জৈব সার, সুষম মাত্রায় রাসায়নিক সার এবং পিঁপড়া দমনে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।
আক্তারুজ্জামান আরো বলেন, চলতি বছর ২৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছি। এছাড়াও আশা করছি প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রিকরতে পারবো। বাগান পরিচর্যার জন্য দৈনিক মজুরিতে ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। বাগানের সকল খরচ বাদ দিয়ে বছরে ৭০-৮০ লাখ লাভ হবে বলে আশা করছি।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান আলী বলেন, আক্তারুজ্জামান প্রশিক্ষণ নিয়ে ফল চাষ শুরু করেন। তার এই ফল চাষের উদ্যোগ এলাকায় বেশ প্রশংসা পাচ্ছে। আমরা তাকে ফল চাষের রোগ-বালাই দমনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি ফল চাষে লাভবান হয়েছেন। পাশাপাশি আরো অনেক কৃষককে ফল চাষে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। কৃষি অফিসের একজন উপ-সহকারী কর্মকর্তা প্রতিদিনই তার বাগান পরিদর্শন করেন।