ভারত একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করা হয়। কৃষকরা ফসল ফলানোর জন্য পুরোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে। পুরোনো পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে ফসল উৎপাদনে প্রচুর সময় লাগে এবং আয়ের পরিমান কম হয় ।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কৃষকরা কৃষকরা পুরোনো পদ্ধতি ছেড়ে নতুন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছে যাতে সময়ে বেশি ফসল ফলানো যায় । এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকদের আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ আমরা আপনাকে ভারতে উৎপাদিত ৪টি দামি সবজি সম্পর্কে বলতে চলেছি, যেগুলি চাষ করে আপনিও ধনী হতে পারবেন।
১) শতাভরী: শতাভরী ভারতে উৎপাদিত সবচেয়ে দামি সবজির মধ্যে অন্যতম। এটি ঔষধির গুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। এই সবজিটি ভারতসহ শ্রীলঙ্কা ও হিমালয়ের পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদন করা হয়। এই সবজিটি সাতমুলি ও সাতমূল নামেও পরিচিত।
শতাভরী গাছটি এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। যখন এর ফল মাটির নিচে জন্মায়। ভারতের বাজারে শতাবরী ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়। এই সবজিটি অনেক ধরনের রোগ নিরাময়ে কাজে ব্যবহৃত হয়। শুধু তাই নয়, শতাবরীর পাউডার বানিয়ে সেটিকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। এর কারণে বিদেশে এর চাহিদা অনেক বেশি। তাই যদি কেউ শতাভরী চাষ করে তাহলে এর থেকে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবে।
২) বক চয়: বক চয় একটি বহিরাগত সবজি।এটিকে অনেকে চাইনিজ বাঁধাকপিও বলে থাকে। এই সবজিটি দেখতে অনেকটা বাঁধাকপির মতো। এতে ফাইবার, ভিটামিনসহ অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যদিও বক চয় ভারতে শুধুমাত্র কয়েকটি নির্বাচিত জায়গায় চাষ করা হয় যার কারণে বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি। আপনি যদি বক চয় চাষ করেন তাহলে এর একটি মাত্র ফল বিক্রি হয় প্রায় ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। এই সবজি সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। অন্যদিকে আবার এটি মহিলাদের প্রোটেস্ট ও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিকেও কমায়। অতএব, বক চয় চাষ কৃষকদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক প্রমাণিত হতে পারে।
৩)চেরি টমেটো: ভারতে প্রচুর পরিমাণে টমেটো চাষ করা হয়। টমেটো প্রতিটি খাবারকে সুস্বাদু করার পাশাপাশি, খাবারকে দুর্দান্ত রঙ দেয়। কিন্তু আপনি যদি কম সময়ে বেশি মুনাফা অর্জন করতে চান তবে আপনাকে চেরি টমেটোর চাষ করতে হবে। চেরি টমেটো সাধারণ টমেটোর তুলনায় আকারে ছোট হয়। এই টমেটো গুলিকে সাধারণত স্যালাটের জন্য ব্যাবহার করা হয়। বাজারে চেরি টমেটোর চাহিদা অনেক বেশি। এটি শুধুমাত্র নির্বাচিত কৃষকরা চাষ করেন। বর্তমানে ভারতের বাজারে চেরি টমেটো বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে।
৪) জুচিনি একটি বিদেশী সবজি যার চাহিদা ভারতীয় বাজারে দ্রুত পরিমানে বাড়ছে। এই সবজি ওজন কমাতে খুবই সহায়তা করে। এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী। জুকিনি গরম জলবায়ুযুক্ত জায়গায় সহজেই উৎপাদন করা যায়। কারণ এই সবজি খুব ঠান্ডা জায়গায় জন্মায় না। জুচিনি সাধারণত হলুদ এবং সবুজ রঙের হয়। এই গাছ গুলি গুল্মযুক্ত হয় এবং ৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ভারতের বাজারে এক কেজি জুচিনি বিক্রি হয় ১৩০ টাকায়। যদি এক একর জমিতে জুচিনি চাষ করা যায় তবে তা থেকে বছরে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করা যেতে পারে। আপনিও যদি পুরোনো চাষাবাদের পরিবর্তে আধুনিক চাষাবাদ করে লাভবান হতে চান, তাহলে এই চারটি দামি সবজি চাষ করতে পারেন। এসব সবজির উৎপাদন দ্রুত তৈরি হয়। আবার এই সবজি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা আয়ও করা যায়।