কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায়, জেনে নিন কি করণীয়

কৃষি ও প্রকৃতি

নিউজ ডেষ্ক- ধরুন বাড়িতে একটা কাঁঠাল গাছ আছে, কিন্তু কাঁঠাল পাকার আগে ফেটে যায়। এ অবস্থায় করণীয় কী?

এক্ষেত্রে আপনাকে সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। কাঁঠাল গাছটিতে ইউরিয়া ও ফসফেট সার প্রয়োগ বন্ধ রাখুন। এর পরিবর্তে প্রতি বছর বর্ষার শুরুতে ৩০ কেজি হারে জৈবসার, ২৫০ গ্রাম হারে এমপি সার, ২০ গ্রাম হারে জিংক সালফেট (মনো) সার এবং ৪০ গ্রাম হারে বরিক এসিড সার প্রয়োগ করুন।

কাষ্টল গাছগুলোতে সার প্রয়োগ জানলে কাঁঠাল গাছে সার প্রয়োগ সহজ হয়। তাই এ বিষয়েও জেনে নিন

কাঠের গাছে সার প্রয়োগ নির্ভর করে মাটির প্রকৃতি বা গঠন, গাছের প্রজাতি ও বয়সের ওপর। জৈবসার গাছের গোড়ার চারদিকে ছিটিয়ে হালকা করে কুপিয়ে মিশিয়ে দিতে হয়। আধা পচা কম্পোস্ট গাছের গোড়ায় মালচ হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

অন্যান্য সার মাটির ওপর ছিটিয়ে দিয়ে হালকা করে কুপিয়ে দিতে হয়। বাড়ন্ত গাছের বেলায় গাছের গোড়া থেকে ৫০ থেকে ১৫০ সেমি. দূরে ১৫ সেমি. গভীর করে মাটি খুঁড়ে সার প্রয়োগ করে আবার তা ভরাট করে দিতে হয়।

সাধারণভাবে প্রতিটি মেহগনি গাছে গোবর বা কম্পোস্ট সার ১৫ থেকে ২০ কেজি, ইউরিয়া ১৫০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, এমওপি বা পটাশ ১০০ গ্রাম এবং ছাট ৫০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি বছর গাছের বৃদ্ধির ধরন অনুযায়ী ২৫ থেকে ৫০ গ্রাম হারে রাসায়নিক সারের পরিমাণ বাড়াতে হয়।

এরপর হালকা সেচ দেয়া প্রয়োজন। তবে গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈবসার বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করা হলে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন পড়ে না। বছরে দুইবার কাঠের গাছে সার দিতে পারলে ভালো হয়।

কাঁঠালের ‘মুচি পঁচা’ রোগের কারণ ও প্রতিকার ব্যবস্থা
কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠালে প্রচুর পরিমানে শর্করা, আমিষ ও ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এটি এমন একটি ফল যার কোন অংশই ফেলে দিতে হয় না (কোষ ও বীজ মানুষের খাদ্য ও বাকী অংশ পশু খাদ্য)। এ ফল কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। বাংলাদেশে উৎপাদনের দিক থেকে কলার পরেই কাঁঠালের স্থান। এ ফল অন্যান্য ফলের তুলনায় দামে কম হওয়ায় গরিব মানুষ সহজে খেতে পারে। কৃষকেরা এ ফলটি চাষ করতে গিয়ে গাছে কিছু রোগের সম্মুখীন হন। ফলে বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়। রোগগুলো নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে কাঁঠালের উৎপাদন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। কাঁঠালের একটি মারাত্মক রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বর্নণা করা হল।

মুচি পঁচা/মুচি ঝরা (Soft rot) রোগ

রোগের কারণঃ রাইজোপাস আরটোকার্পি (Rhizopus artocarpy) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের বিস্তারঃ

গাছের পরিত্যক্ত অংশে জীবাণু বেঁচে থাকে এবং বাতাস, পানি ও পোকামাকড় মাধ্যমে রোগ ছড়ায়। বৃষ্টিপাতের সময়, ঝড় তুফানের পরে রোগের প্রকোপ বেশী দেখা যায়। ফুল ও ফল আসার সময় গরম, আর্দ্র আবহাওয়া বিরাজ করলে রোগের আক্রমণ বেশী হয়।ছায়াযুক্ত স্থানে পর্যাপ্ত আলোর অভাবে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।

রোগের লক্ষণ:

১. এই রোগের দ্বারা গাছের ফুল ও কচি ফল আক্রান্ত হয়।
২. আক্রান্ত ফুলের বা কচি ফলের বোঁটার গোড়ায় পানি ভেজা দাগ পড়ে।
৩. আক্রান্ত ফল সাদা মাইসেলিয়াম দ্বারা আবৃত থাকে।
৪. পরবর্তীতে আক্রান্ত স্থানের কোষ মরে কালো রং ধারণ করে।
৫. পরে সম্পূর্ণ ফলটি আক্রান্ত হয়ে কালো রং ধারণ করে।
৬. পরিশেষে আক্রান্ত ফল পঁচে ঝরে পড়ে।

রোগের প্রতিকারঃ

১. গাছের নিচে ঝড়ে পরা পাতা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
২. কাঁঠাল বাগানে কোন জৈব সার বা কম্পোস্ট তৈরী না করাই ভাল।
৩. বাগান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৪. ফল বেশী ঘন হলে পাতলা করে দিতে হবে।
৫. মুচি ধরার আগে ও পরে কপার অক্সিক্লোরাইড (যেমন-কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম অথবা টেবুকোনাজল (যেমন-ফলিকুর ২৫০ ইসি) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলিলিটার হারেমিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।

কাঁঠালের ‘মুচি পঁচা’ রোগের কারণ ও প্রতিকার ব্যবস্থা শিরোনামে সংবাদের তথ্য কৃষি বার্তা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে৷

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *