নিউজ ডেস্ক: কাঁচাকলা একটি সহজলভ্য খাবার। বারো মাস এটি পাওয়া যায়। কাঁচাকলা আমাদের শরীরের জন্য খুব-ই উপকারী। ভেষজগুণে সমৃদ্ধ কাঁচাকলার মধ্যে রয়েছে দারুণ সব পুষ্টিগুণ। পুষ্টি সরবরাহের পাশাপাশি এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও কাঁচাকলা ক্যালরিরও একটি ভালো উৎস। পাকা কলার তুলনায় কাঁচাকলায় স্টার্চের পরিমাণ বেশি এবং চিনির পরিমাণ কম রয়েছে। কাঁচাকলার সুস্বাদু তরকারি আমাদের দেহের জন্য খুবই উপযোগী।
প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযোগী কাঁচকলায় যে সমস্ত পুষ্টিগুণ রয়েছে তা হলো জলীয় অংশ- ৭৮%, শর্করা- ১৭-৩৪ গ্রাম, প্রোটিন- ২/৬০ গ্রাম, স্নেহ- ০.০৩ গ্রাম, খনিজ লবণ- ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ১১-৩০ মি. গ্রাম, আয়রন- ০.৪ গ্রাম, ভিটামিন বি- ০.০৯ মিঃ গ্রাম, বি¬২- ০.০৬ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন সি- ৪.০৩ মি.গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৮৩ কি. ক্যালরি।
কাঁচাকলা অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এটিতে প্রতিরোধী স্টার্চ রয়েছে, এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট যা পাচনতন্ত্রে অন্ত্র-বান্ধব জীবাণুগুলোর বৃদ্ধির জন্য খাদ্য হিসাবে কাজ করে। এটি শর্ট-চেন ফ্যাটি অ্যাসিড উৎপাদনও বাড়াতে পারে, যা হজমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং অ্যান্টিবায়োটিক-সম্পর্কিত ডায়রিয়ার চিকিত্সায় কাঁচাকলা খেতে পরামর্শ দেন অনেক চিকিৎসক।
কাঁচাকলা কোলন ক্যানসার থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, জীবাণু এবং ইনফেকশন দূর করে কোলনকে সুস্থ রাখে। দীর্ঘমেয়াদী কোলন সংক্রান্ত রোগ দূর করতে কাঁচাকলা বেশ কার্যকরী।
কাঁচাকলার উচ্চ ফাইবার উপাদান কোলেস্টেরল ঠিক করতেও সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। কাঁচা এবং পাকা কলার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল যে, সবুজ কলায় কার্বোহাইড্রেটগুলো প্রধানত স্টার্চের আকারে থাকে। কলা পাকার প্রক্রিয়ার সময়ে ধীরে ধীরে যা চিনিতে পরিণত হয়। সে কারণে বেশির ভাগ মানুষ পাকা কলা খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু কাঁচকলা ডায়াবিটিসের জন্য খুবই উপকারী।
কাঁচাকলা আপনার হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এটি পটাশিয়ামের চমৎকার উৎস। পটাশিয়াম একটি অত্যাবশ্যক খনিজ, যা পেশীকে সঙ্কুচিত করতে এবং হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনে সাহায্য করে। কাঁচাকলা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
কিডনির সমস্যাতেও কাঁচাকলা বিশেষ কাজে লাগে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কাঁচাকলায় থাকা পটাশিয়াম এবং অন্যান্য দরকারি ভিটামিন কিডনির ক্রিয়াকে সুচারুভাবে চালিয়ে নিয়ে যায়।
কাঁচাকলা ভিটামিন বি-৬ এর অন্যতম উৎস। এক কাপ সিদ্ধ কাঁচাকলা দৈনিক ৩৯ভাগ ভিটামিন বি-৬ চাহিদা পূরণ করে। ভিটামিন বি-৬ রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে। এছাড়া ভিটামিন বি-৬ রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণ করে।
কাঁচাকলায় থাকে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণ যা দেহের বিপাক ক্রিয়া সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে ও ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।