কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি, নামাজ না পড়লে কাটা হবে শ্রমিকদের বেতন

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক-সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করলো সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ট্রাভেলস। নামাজ না পড়ে অন্য কোনো কাজ করতে বেতন কাটার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার (২৮ মার্চ) থেকে এটি কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। শাহজাদপুর ট্রাভেলসের এমডি আলিফ খানের সই করা নোটিশ শাহজাদপুর ট্রাভেলসের প্রতিটি টিকিট কাউন্টার ও পরিবহনগুলোতে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবহন কোম্পানিটির শাহজাদপুরের কাউন্টার মাস্টার শাহিন আহম্মেদ বলেন, এমডি চান আমরা যেন ঠিকমতো নামাজ আদায় করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে নিজের মনও ভালো থাকে। শাহজাদপুর ট্রাভেলসের ম্যানেজার আব্দুল্লাহ খান শোভন বলেন, এমডির এমন সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। নামাজ সবার ঊর্ধ্বে।

আমাদের চেয়ারম্যানও চাচ্ছেন সবাই নামাজ পড়ুক শাহজাদপুর ট্রাভেলসের এমডি আলিফ খান বলেন, সোমবার থেকে শাহজাদপুর ট্রাভেলসের সব মুসলিম স্টাফকে নামাজ আদায় করতে হবে। গাড়ি চলাকালীন নামাজের সময়ে বাধ্যতামূলক ১০ মিনিট খণ্ডকালীন বিরতি দিতে হবে। কাউন্টারে যারা আছেন তারা তাদের কার্যক্রম ১০ মিনিটের জন্য বন্ধ রেখে নামাজ পড়তে যাবেন।

আমাদের সব পরিবহনে ও কাউন্টারে এই নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটা শুধু মুসলিমদের জন্য নির্দেশনা। আমাদের প্রতিষ্ঠানে ওভাবে নন-মুসলিম নাই। মুসলিম হোক আর নন-মুসলিম হোক, তাদের প্রার্থনার জন্য সময় দেয়া হবে। এদিকে শাহজাদপুর ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান হাজি আব্দুল ওলি খান অরুণ বলেন, আমাদের পরিবহন সেক্টরটায় যারা আসেন, তাদের শিক্ষার ব্যাকগ্রাউন্ড খুব কম। আমার এক শর বেশি স্টাফ। তাদের সবাইকে যদি আমি কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারি, আমার পরিবহনের শৃঙ্খলাটা সঠিক লাইনে চলে আসবে। আর আমি যেহেতু মুসলিম, আমিও কিছু সওয়াবও কামাইলাম।

বেতন কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার প্রাইভেট কোম্পানি। আমি আমার স্টাফদের সঠিক লাইনে রাখার জন্য যেকোনো কিছু করতে পারি। বেতন কর্তনের বিষয়টা আসলে তাদের প্রেসারে রাখার জন্য। তুমি (কর্মী) এই শৃঙ্খলার মধ্যে থাকো। ওরা (কর্মী) সিগারেট খায়, রাস্তা থেকে টিকিটবিহীন যাত্রী ওঠায়। বিভিন্ন সময় আমরা যাত্রীদের অভিযোগ পাই। তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি নিয়মে রাখার জন্য, কিন্তু কোনো কাজ হয় নাই। তাহলে সবশেষ একটা চেষ্টা করে দেখি তাদের লাইনে রাখা যায় কি না, সঠিক পথে চলে কি না।

তবে কর্মীদের জন্য এমন কোনো নির্দেশনা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি আইনে নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থাটির উপপরিচালক আলতাব হোসেন বলেন, দেশে প্রচলিত যে আইন আছে, সে আইন তো মানতে হবে। আইনের বাইরে তো কেউই না। আমার জানা মতে, কেউ নামাজ না পড়লে তাকে জোর করে নামাজ পড়ানোর কোনো স্কোপ নাই। তিনি আরও বলেন, নামাজ না পড়ার কারণে বেতন কর্তন হওয়ার অভিযোগ কেউ করলে আমরা দেখতে পারি। এ রকম ঘটনা ঘটলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি দেখা যেতে পারে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *