করোনা আসার পর পৃথিবীতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। আর এর প্রভাব পড়েছে যৌনসম্পর্কের ওপরেও। দীর্ঘ দিন ধরেই চিকিৎসকরা বলে আসছেন, মরণঘাতী করোনা পুরুষের গড়পরতা যৌনক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। আর বিষয়টি পুরোপুরি চিকিৎসাবিজ্ঞানের আওতাধীন একটি বিষয়। অতিমারির কারণে বদলে যাওয়া সামাজিক কাঠামোর প্রভাব পড়েছে যৌনসম্পর্কের ওপরও। আর এমনটাই জানালেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানের গবেষক জাস্টিন গার্সিয়া এবং কলোরাডো ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানের গবেষক হেলেন ফিশার এ বিষয়ে যৌথভাবে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। যেখানে তারা দাবি করেন, পরিবর্তিত সামাজিক পরিস্থিতিতে যৌনসম্পর্কের প্রতি পুরুষদের আগ্রহ বিপুলভাবে কমে গেছে। আর এমনটা হয়েছে যারা বৈবাহিক বা প্রেমের কোনও সম্পর্কে নেই, তাদের ক্ষেত্রে। বলা যায় যৌনসম্পর্কের প্রতি উদাসীন হয়ে গেছেন তারা।
তাদের সমীক্ষায় দাবি করা হয়, সারা পৃথিবীর ৮১ শতাংশ পুরুষই এখন মনে করছেন, মহামারি করোনার পরবর্তী সময়ে যৌনসম্পর্কের গুরুত্ব বা প্রয়োজন আর আগের মতো নেই। যৌনসম্পর্কের প্রতি পুরুষের আগ্রহ কমে যাওয়ার পেছনে সমাজবিজ্ঞানীরা যেসব বিষয় খুঁজে পেয়েছেন-দীর্ঘ সময়ের জন্য স্বাভাবিক কাজকর্ম মেলামেশা সবকিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার প্রভাব বেশি মাত্রায় পড়েছে কোনও সম্পর্কে না থাকা পুরুষদের মনে।
সমাজবিজ্ঞানীরা আরও দাবি করেন, বিশেষ করে পুরুষের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি বেশি করে দেখা যায়, সেটি হল- যৌনসম্পর্কের সুযোগ যত বাড়ে, যৌনতার প্রতি তাদের আগ্রহও তত বাড়ে। সম্পর্কের সুযোগ কমলে, তাদের আগ্রহও কমতে থাকে। মাহমারির সময়ে মেলামেশার পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে। যাদের কোনও স্থায়ী সঙ্গী বা সঙ্গিনী নেই, তারা অচেনা মানুষের থেকে দূরে চলে গেছেন। ফলে নতুন করে যৌনসম্পর্কের সুযোগটাই হারিয়ে গেছে। সুযোগ কমে যাওয়ায় একা পুরুষদের যৌনসম্পর্কের প্রতি আগ্রহ কমেছে।
এর পাশাপাশি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আরও দুটি বিষয়ে জাস্টিন এবং হেলেন গুরুত্ব দিয়েছেন। সেগুলো হল-তাদের মতে, অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে চিন্তা, রোজগার নিয়ে অনিশ্চয়তা পুরুষদের মধ্যে বেড়েছে। যৌনতার প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ার বড় কারণ এটিও।