কমিউনিটি ক্লিনিক কবে খুলবে কেউ জানে না

Uncategorized

নিউজ ডেষ্ক- দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা রানাশাল কমিউনিটি ক্লিনিক কবে খোলা হবে তা জানে না এলাকাবাসী। প্রতিদিন ক্লিনিকটিতে চিকিৎসা নিতে আসা এলাকার রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। এতে ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মা, শিশুসহ ওই এলাকার মানুষ।

সরেজমিনে এ উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রানাশাল কমিউনিটি ক্লিনিক সেবাকেন্দ্রটিতে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

আজ রবিবারও ক্লিনিকটি খোলা হয়নি বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

জানা গেছে, গ্রামের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনার উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে ৫৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর মধ্যে রানাশাল কমিউনিটি ক্লিনিক একটি। ক্লিনিকটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে রানাশাল, ভানুয়াবহ ও কলিমাজানি উত্তরাংশের গ্রামের লোকজন চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে ওই কমিউনিটি ক্লিনিকে চামেলী আক্তার নামের একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী ও একজন স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়। সিএইচসিপি সপ্তাহে ছয় দিন, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও স্বাস্থ্য সহকারী সপ্তাহে দুই দিন করে ওই ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা। ২০১১ সালে পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং ২০১৬ সালে স্বাস্থ্য সহকারি শামছুর নাহার রুমা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। সিএইচসিপি চামেলী আক্তার গত ১৩ মার্চ থেকে মাতৃকালীন ছুটিতে আছেন। এ কারণে ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তবে ক্লিনিকটি কবে খোলা হবে তা জানে না রানাশাল গ্রামের লোকজন। এতে ওই এলাকার মা, শিশু ও এলাকাবাসী ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

রানাশাল গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে বন্ধ থাকায় ওষুধ নিতে পারছি না। একজন প্রতি মঙ্গলবার আসত। এখন তাও আসে না। ‘

আমিনুর শিকদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে ক্লিনিকটি বন্ধ থাকায় গ্রামের লোকজন ওষুধ নিতে পারছে না।

রানাশাল গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে। শনিবার সকালে ওষুধ নিতে ক্লিনিকে এসেছিলেন। বন্ধ থাকায় পাশের দোকান থেকে খাবার স্যালাইন ও ধেরুয়া বাজার থেকে ওষুধ আনতে হয়েছে।

ক্লিনিকের পাশে দরজির কাজ করে জীবিকা নির্বাহকারী রানাশাল গ্রামের নান্নু মিয়া বলেন, ‘ক্লিনিকটি শেষ কবে খোলা হয় তা আমার মনে পড়ছে না। এ জন্য গ্রামের লোকজন স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে না। ‘

জহিরুল ইসলাম জানান, ক্লিনিকটি কবে বন্ধ হয়েছে তা মনে পড়ছে না। চামেলী আক্তার যখন বসতেন তখন ওষুধ নিতে এলে এলাকার লোকজনের সঙ্গে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার করতেন।

রানাশাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন জানান, আজ রবিবারও ক্লিনিকটি খোলা হয়নি। এতে গ্রামের লোকজন চিকিৎসাসেবা নিতে পারছে না।

রানাশাল কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) চামেলী আক্তার জানান, তিনি গত ১৩ মার্চ থেকে মাতৃকালীন ছুটিতে আছেন। ২০১১ সালে পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং ২০১৬ সালে স্বাস্থ্য সহকারী শামছুর নাহার রুমা বদলি হয়ে অন্যত্র গেছেন বলে তিনি জানান।

মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোহেলী শারমীন বলেন, পরিবার কল্যাণ সহকারী পদ শূন্য রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম জানান, ৬৯ জন স্বাস্থ্য সহকারীর পদ থাকলেও এ উপজেলায় ৩৯ জন কর্মরত আছেন। এ ছাড়া রানাশাল কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) চামেলী আক্তার মাতৃকালীন ছুটিতে আছেন। ওই কমিউনিটি ক্লিনিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে একজন স্বাস্থ্য সহকারী দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *