দেশের আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় গতকাল সোমবার ঘোষণা হয়েছে। রায়ে খালাসপ্রাপ্ত সাত পুলিশ সদস্য মুক্তি পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন। আর ওসি প্রদীপ আর লিয়াকতকে পৃথক কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেল সুপার।
মেজর সিনহা পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার ১৮ মাস পর গতকাল এ মামলার রায় ঘোষণা করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ে এই আদালতের জজ মো. ইসমাইল প্রধান আসামি পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড, অপর ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি সাত আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার নেছার আলম জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকতকে পৃথকভাবে কনডেমড সেলে রাখা হয়েছে। বাকি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে মারিস দুনিয়া এলাকার স্থানীয় তিনজনকে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে ও তিন পুলিশ সদস্যদের পৃথকভাবে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কনডেমড সেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত স্বাভাবিক রয়েছে। তবে তারা চুপচাপ রয়েছে। তাদের ঠিকমতো স্বাভাবিকভাবে খাবার দেওয়া হচ্ছে এবং তারা খাবার গ্রহণ করছেন।
বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত
এদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আদালতের নির্দেশটি সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার কারাগারে আসার পর তাদের মুক্ত করে দেওয়া হয়। আদালতের আদেশের মধ্যেই লেখা ছিল আদেশটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদেরকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য।
খালাসপ্রাপ্তদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মমতাজ আহমেদ জানিয়েছেন, খালাসপ্রাপ্ত সাত পুলিশ সদস্য জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে গতকালই তাদের পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর ইনাম আহমেদ রাশেদ খান। এরপর নিহতের বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।