ঈদের পর মাছ কেজিতে ৫০ বেড়ে ৪০০ টাকা!

Uncategorized

নিউজ ডেষ্ক- সারাদেশে কার্পজাতীয় মাছ উৎপাদন, বিপণন-বিক্রিতে প্রথম স্থানে রয়েছে রাজশাহী। করোনা মহামারির শুরু থেকে মাছের দাম উঠানামা করলেও বর্তমানে প্রতিকেজি মাছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। প্রতিকেজি বড় আকারের কাতল রাজশাহীর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে; যা ঈদের আগে ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর বাজারে মাছের চাহিদা তেমন নাই। পর্যাপ্ত ক্রেতা হিসেবে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরাই। ঈদের ছুটি কাটিয়ে শহরে আসতে শুরু করলে হরদম বেচাকেনা শুরু হবে। তবে, মাছ ধরার জেলে, বহন করার গাড়ি ও সর্বপরি লোকবল সংকটের কারণে বাজারে মাছের দাম বেড়েছে। এ দাম থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।

আজ শনিবার (৭ মে ২০২২) রাজশাহীর সাহেববাজার মাছের আড়ত, উপশহর নিউমার্কেট, লক্ষীপুর মাছের আড়ত ঘুরে দেখা যায় বিগত সময়ের চেয়ে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে কার্পজাতীয় মাছ। ঈদের পরের দুদিন দোকান না খুললেও আজ থেকে দোকান চালু করেছে দোকানিরা।

একদিকে অক্সিজেন স্বল্পতা কমাতে গত মাসের শুরু থেকে বড় আকারের মাছ বিক্রি করছেন চাষিরা। অন্যদিকে ক্রেতা-বিক্রেতার সমারোহে ব্যবসা জমিয়ে তুলেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। জেলায় উৎপাদিত রুই, কাতলা, ম্রিগেল, গ্রাসকার্প, ব্লাডকার্প, সিলভারসহ বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছ ঢাকার বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে তাজা মাছ।

পড়তে পারেন: মাছ চাষে গ্যারান্টি ছাড়াই ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিবে সরকার

সাহেববাজারের মাছ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, মাছের দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। মাছ ধরার লোক নাই। সবাই ঈদের কারণে ব্যস্ত। আমরা মাছ কিনতে গিয়ে না পেয়ে বেশি টাকা দিয়ে চাষির পুকুর থেকে ধরে নিয়ে আসছি। এতে বেশি খরচ পড়ছে। এ বেশি দাম থাকবে না। কমে যাবে মনে হচ্ছে। আর নাও কমতে পারে, তেল-মসলা সবকিছুর দাম বেশি।

রাজশাহীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারের মৎস্য আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে প্রতিকেজি ছোট রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে যা আগে ২৫০-২৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। ৫ কেজির রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে যা আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কমে, সিলভার কার্প ২০০, ছোট আকারের কাতল ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা; ৫ কেজির কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা , দুই কেজি ওজনের মৃগেল চাষি পর্যায়ে ২০০ টাকা এবং বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। এছাড়া তেলাপিয়া ২০০ টাকা, বোয়াল ৮০০ টাকা এবং বাগদা চিংড়ি ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি মাছের কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত।

রাজশাহী জেলা মৎস্য সূত্র জানায়, রাজশাহী জেলায় মৎস্য উৎপাদন ও বিপণন-বিক্রির সঙ্গে জড়িত জেলার প্রায় ৯ লাখ মানুষ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮০ হাজার ১৪১ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়। বর্তমানে মাছ উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৮৩ হাজার ৪৯২ মেট্রিন টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে জেলায় মাছ উদ্বৃত্ত ৩১ হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মাছের উদ্বৃত্ত প্রায় আড়াই গুণ। সেইসাথে মোট জলাশয়ের সংখ্যা বেড়েছে। তিন ৪৮ হাজার ৪২৭টি থেকে বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৭২০ টিতে।

জেলার পবা উপজেলার পারিলা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ২০১৯-২০ সালের দিকে ৩-৪ কেজি ওজনের রুই বিক্রি করেছি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে মাছের কিছুটা দাম বেড়েছে। পাইকারিতে আমরা ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেশি পাচ্ছি। রাজশাহীতে উৎপাদিত মাছের কার্প জাতীয় মাছ প্রায় ৮৫ শতাংশ। এছাড়াও কার্পজাতীয় মাছ উৎপাদনে শীর্ষে থাকা রাজশাহী থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন প্রায় ১৫০ ট্রাক মাছ রপ্তানি হয়ে থাকে। বর্তমানে ঢাকায় মাছের চাহিদা থাকায় খুশি এখানকার চাষিরা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *