নিউজ ডেষ্ক- ইতিহাসে এবারই প্রথম আরব-মুসলিম দেশ হিসেবে কাতার এবার ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করতে যাচ্ছে ফিফা। এটাই সর্বকালের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ও শীতকালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপ। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা দর্শক ও ভক্তদের স্বাগত জানাতে বর্ণিল সাজে সেজেছে মুসলিম অধ্যুষিত দেশ কাতার। বিশ্বকাপ চলাকালে ইসলামের শিক্ষা ও পরিচিতি তুলে ধরতে প্যাভিলিয়ন চালু করেছে দেশটির আওকাফ ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ১০ নভেম্বর আলজাজিরা মুবাশির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপের সময় নানা দেশের ভক্ত ও দর্শকদের কাছে ইসলামের পরিচয় তুল ধরতে এ উদ্যোগ নেয় আওকাফ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়। প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন ভাষায় মুদ্রিত ইসলাম ও আরব সংস্কৃতির পরিচিতিমূলক বই বিতরণ করা হবে। দর্শকদের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য থাকবেন সেই ভাষার দায়ি বা ইসলাম প্রচারক। বিশেষত উপসাগরী দেশ কাতারের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে দর্শনার্থীদের কাছে। এতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর প্রযুক্তির সাহায্যে দেখা পবিত্র কাবাঘর, হাজরে আসওয়াদসহ মক্কা ও মদিনার ঐতিহাসিক ইসলামী স্থাপনা।
এদিকে বিশ্বকাপের আয়োজনকে ঘিরে নতুনভাবে সেজেছে কাতার। আরব ও ইসলামী স্থাপত্যশৈলীকে ধারণ করে প্রস্তুত রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ৮ স্টেডিয়াম। রাজধানী দোহাসহ বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো হয়েছে মহানবী (সা.)-এর হাদিস সম্বলিত ম্যুরাল। সামাজিক শিষ্টাচার নিয়ে মহানবী (সা.)-এর প্রজ্ঞাপূর্ণ বাণীগুলো লেখা হয়েছে আরবি ও ইংরেজি ভাষায়। অর্থপূর্ণ হাদিসগুলো চলার পথে দর্শক ও পাঠকদের মনে তৈরি করে অন্য রকম অনুভূতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার্স-এর মহাসচিব ড. আলি আল-কারাহ দাগি বলেছেন, ‘কাতার বিশ্বকাপ ঘিরে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ইসলামের সুমহান বার্তা ছড়িয়ে দিতে অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেয়ালে আরবি ও ইংরেজিতে লেখা হয়েছে মহানবী (সা.)-এর অর্থপূর্ণ হাদিস। এমনটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ’
এদিকে ফুটবল বিশ্বকাপ ঘিরে এমন উদ্যোগের প্রশংসায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক তামির আল-মিসহাল লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপ উপলক্ষে আগত ভক্তদের ইসলামের সঙ্গে পরিচিত করতে মহানবী (সা.)-এর বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে দোহার দেয়ালগুলো। আরবিতে লেখা হাদিসগুলোর পাশাপাশি ইংরেজি অনুবাদও সংযুক্ত করা হয়।’
আলজেরিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক হাফিজ দারাজি লিখেছেন, ‘বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগেই নতুন সাজে সেজেছে কাতার। এর দেয়ালে বর্ণি রূপে প্রকাশ পাচ্ছে ইংরেজি অনুবাদসহ মহানবী (সা.)-এর হাদিস। এর মাধ্যমে কাতার নিজের ইসলামী সংস্কৃতি ধারণের পরিচয় দিয়েছে।’
এদিকে উপসাগরীয় দেশ কাতারের পাঁচটি শহরে ৮ স্টেডিয়ামে এবার ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২০ নভেম্বর আল বাইত স্টেডিয়ামে এর উদ্বোধনী ম্যাচ এবং ১৮ ডিসেম্বর লুসাইল স্টেডিয়ামে সমাপনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী বিশ্বকাপ-২০২৬ এ থাকবে ৪৮টি দল যা কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির