নিউজ ডেষ্ক– আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের দুর্নীতির কারণে দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একটাই মাত্র কারণ, সেটা হচ্ছে- আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের দুর্নীতি।
আজ রবিবার দুপুরে ছাত্রদলের আয়োজনে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সর্ব সাধারণের ক্রয় ক্ষমতায় নাগালে রাখার দাবিতে করা সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে এই ছাত্র সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে তারা দুর্নীতি করে ফুলেফেপে বড় হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে কেনো? কারণ সয়াবিন তেলের যারা ব্যবসা করে তারা বেশিভাগই হচ্ছে আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আজকে এই গ্যাসের বাড়ছে কেনো? কারণ যে এলপিজি গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করে নিয়ে আসছে, তাদের (সরকার) একমাত্র শিল্প উপদেষ্টা এর সঙ্গে জড়িত। সুতরাং মূল্যবৃদ্ধির একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে- এই সরকারের দুর্নীতি, দুর্নীতি এবং দুর্নীতি। সেই সাথে তাদের অযোগ্যতা অপদার্থতা।
এদিকে সমাবেশে দুপুর ১টায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্যে শুরু করার পর পরই মঞ্চের সামনে ছাত্রদলের দুই কর্মীর মধ্যে মারামারির পরিস্থিতি তৈরি হয়। এতে মঞ্চের সামনে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখা দেয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে মির্জা ফখরুল বক্তব্য শুরু করেন।
বক্তব্যের শুরুতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এতো সুশৃঙ্খল সমাবেশ। কিন্তু তোমরা তোমাদের নিজেদের ধৈর্য হারিয়ে ফেললে সেটা এই দলের জন্য ভালো হবে না, বসো। অনেকক্ষণ বক্তৃতা হয়েছে তো, আমরা সবাই বিরক্তি হয়ে পরেছি- ঠিক কি না? তাই না?’
আজকে আর অন্য কোন পথ নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজকে আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা। আজকে ভয়াবহ একটি সরকার, যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে টিকে আছে- তাদেরকে সরাতে হবে। আর একটা গভীর চক্রান্ত আছে। সেই চক্রান্ত হচ্ছে, এদেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত রেখে তারা একটা রাজতন্ত্র চালাবে।
নেতাকর্মীদেরকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও মুক্ত সমাজের জন্য ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। আমাদেরকে সেই মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে আজকে আবার সকল মানুষকে ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজন হলে আরো একবার মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এদেশকে মুক্ত করতে হবে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল ৯ থেকে ব্যানার ও ফেসন্টুনসহ খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ছাত্রদলের নেতা কর্মীরা প্রেসক্লাবে সমাবেত হতে শুরু করেন। মিছিল থেকে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেন।
এদিকে সমাবেশকে ঘিরে প্রেসক্লাবসহ এর আশপাশের এলাকার কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীসহ অতিরিক্তি পুলিশ সদসদেরও মোতায়েন করা হয়।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।