নিউজ ডেষ্ক- ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নতুন এমপিওভুক্ত একটি বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে অর্থ বাণিজ্যের পাঁয়তারা চলছে
বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে শিক্ষকবিহীন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে নৈশপ্রহরী, আয়া ও দপ্তরি দিয়ে। এতে ভেঙে পড়েছে শিক্ষাদান কার্যক্রম। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন।
জানা গেছে, ২০১২ সালে শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুরে হাজী মো. শামসুদ্দিন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেখানে
বিনা বেতনে নিয়মিত পাঠদান করছেন আসাদুজ্জামান, নাসিরুল ইসলাম, আমির হামজা, রচনা খাতুনসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক। সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়
এমপিওভুক্তির আওতায় এসেছে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির পর বর্তমান সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সাবু ও প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার বিশ্বাস প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষকদের
তাড়িয়ে দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ বাণিজ্যেই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শিক্ষক চাহিদা পাঠিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে শিক্ষকবিহীন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি, নাইটগার্ড ও আয়া।
গত ২৬ আগস্ট সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষক নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নিচ্ছেন দপ্তরি, নাইটগার্ড ও আয়া। অষ্টম শ্রেণিতে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দপ্তরি ক্লাস নিচ্ছেন। অন্যান্য ক্লাসে পাঠদান করানো হচ্ছে না।
দশম শ্রেণির ছাত্র অর্ণব রায় জানায়, তাদের শিক্ষকদের স্কুলে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এখন তাদের ক্লাস নিচ্ছে স্কুলের নাইটগার্ড, দপ্তরি ও আয়া। কয়েক দিন পরই তাদের এসএসসি পরীক্ষা। তাই পড়াশোনা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে তারা।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক আমির হামজা বলেন, ‘আমরা এত দিন কষ্ট করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছি, কিন্তু আজ আমাদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এই পাঁয়তারা করছেন। ’ আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষক আসাদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক রণজিৎ কুমার ২০২০ সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কিন্তু ব্যাকডেটে ২০১৩ সালে তাঁর নিয়োগ দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি সাহাবুল ইসলাম সাবু বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। এখানে নিয়োগ বাণিজ্যের কোনো পরিকল্পনা নেই। ’ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই বিদ্যালয় থেকে একটি চাহিদা এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখবেন। ’