নিউজ ডেষ্ক- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি এবং জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ফেসবুকে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ স্ট্যাটাস সোমবার সন্ধ্যার দিকে নেটিজেনদের মধ্যে কৌতূহলের সৃষ্টি করে। কী এমন ঘটনা জানতে আগ্রহ সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মত-পথ এবং শ্রেণি-পেশার লোকজনের মধ্যে।
শেষ পর্যন্ত খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সোমবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন পাকুন্দিয়া থানায় করা মামলার জ্ঞাত-অজ্ঞাত পরিচয়ের দেড় হাজার আসামির মধ্যে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য ১১৪ নেতাকর্মী। জামিন পাওয়ার পর পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি এবং জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ফেসবুকে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ স্ট্যাটাস দেন। এই ‘আলহামদুলিল্লাহ’ স্ট্যাটাসই কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়।
জানা গেছে, দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিসহ ভোলা এবং নারায়ণগঞ্জে যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩ সেপ্টেম্বর সকালে আয়োজিত এ সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকা।
এ ঘটনায় রাবার বুলেট, লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেলে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শ্রাবণ নামে এক ছাত্রদল নেতাসহ তিনজন সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশের দায়িত্ব পালনে বাধা, আহত করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৩৯ জন নেতাকর্মীর নামোল্লেখসহ দেড় হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা রুজু করে। আর ওই মামলায় বিএনপির ১১৪ নেতাকর্মীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন।
এ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা।
গত ৩ সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষের ঘটনায় পাকুন্দিয়া থানার এসআই মো. শাহ কামাল বাদী হয়ে এ মামলাটি রুজু করেন। আর এ মামলায় পাকুন্দিয়া উপজেলার নেতাকর্মী ছাড়াও কিশোরগঞ্জ সদরের বাসিন্দা জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী এবং পার্শ্ববর্তী কটিয়াদী উপজেলার নেতাকর্মীদেরও এ মামলায় আসামি করা হয়। এ মামলায় একই দিন ২৫ জনকে এবং পরবর্তী সময়ে আরও ২০ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।