নিউজ ডেষ্ক- বর্তমানে ক্রিকেট খেলার অবস্থায় নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি নিজেই জানিয়েছেন এমন কথা। রোববার রাতে একটি মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তির অংশ হিসেবে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমে খোলামেলা কথা বলেছেন সাকিব।
তার ভাষ্য, ‘আমি এখন ক্রিকেট খেলার অবস্থায়ই নেই। এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন সেই অবস্থায় আসবো তখন অবশ্যই চাইবো ক্রিকেট খেলতে।।’
এ বিষয়টি বিসিবির সঙ্গে আলোচনার ওপর নির্ভর করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এটি নির্ভর করছে বিসিবি ও আমার দুই জায়গায় আলোচনার ওপর। একটা সুন্দর অবস্থা তৈরি করা উচিত, যা দেশের ক্রিকেটের জন্যও ভালো হবে, আমার জন্যও ভালো হবে।’
আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ব্যাপারে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে কথা হয়েছে সাকিবের। সেখানে পুরো সফর থেকে বিশ্রাম না পেলে, ওয়ানডে সিরিজ বাদ দিয়ে শুধু টেস্ট খেলতে হলেও সেটি ভালো হবে বলে মনে করেন সাকিব।
তিনি বলেছেন, ‘আমি পাপন ভাইর সঙ্গে কথা বলেছি। খেলবো বলে রাজিও হয়েছি। কিন্তু এখন আমার মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় আছি… ওয়ানডেটা না খেলে টেস্ট সিরিজটা খেলতে পারি। তাহলে হয়তো ভালো মানসিক ও শারীরিক অবস্থায় থাকতে পারবো। এগুলো আসলে আলোচনার ওপর নির্ভর করবে।’
সাকিব আরও যোগ করেন, ‘এই মুহূর্তে যদি আমি খেলি তাহলে আমার দেশের সঙ্গে, দলের সঙ্গে চিট করা হবে। এই জিনিসটা আমি অবশ্যই চাই না। আমি চাই নিজের প্রতি নিজের যে প্রত্যাশা, দল আমাকে যেভাবে চিন্তা করে, সেভাবে যেনো পারফর্ম করতে পারি সেই অবস্থাতে থাকা।’
‘এটার কোনো গ্যারান্টি নেই যে আমি পারফর্ম করবো। তবে অন্তত বুঝবো যে আমি দেশের হয়ে পারফর্ম করার জন্য সেরা অবস্থানে আছি। কিন্তু আমি যদি জানি যে আমি সেই অবস্থায় নেই, তাহলে সময় নষ্ট করার কোনো মানে নেই। দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে গাদ্দারি করা ঠিক বলে মনে করি না।’
ক্যারিয়ারের এই অবস্থায় এসে সাকিব এখন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ব্যাপারে ভাবছেন। এজন্য মূলত বিসিবিতে চিঠি দিয়েছিলেন, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত টেস্ট না খেলার ব্যাপারে। যাতে করে শুধু সাদা বলের ক্রিকেট খেলে মনোযোগ এক দিকেই রাখতে পারেন।
এ কথা জানিয়ে সাকিব বলেছেন, ‘আমার ছুটিটা ছয় মাসের ছিল না। আমি চেয়েছিলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলবো না। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে মনোযোগ দিতে চেয়েছিলাম। যেহেতু দুই বছর দুটি বিশ্বকাপ আছে, আমি সাদা বলে মনোযোগ দিতে চাই।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমার মনে হচ্ছিল দুই বিশ্বকাপে আমাদের বড় কিছু করা সম্ভব। তাই বিশ্বকাপেই মন দিতে চাচ্ছিলাম। এর মানে এই না যে টেস্ট ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছি। আমার মনে হয়, যদি সাদা বলে মনোযোগ দেই… বয়স, ফিটনেস সবকিছু মিলিয়ে আমি হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম।’
কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকায় সামনের দিনগুলো সম্পর্কে এখনও যেন ধোঁয়াশার মধ্যেই আছেন সাকিব, ‘এখন সমস্যা হলো, আমি জানি না আমার সামনে কী আছে। সিরিজ বাই সিরিজ পরিকল্পনা আসলে কঠিন। আমি যদি পুরো বছরের পরিকল্পনা জেনে যাই, আমার জন্য সেটা ভালো হবে।’
‘আমার পরিবারের পরিকল্পনা, ব্যক্তিগত পরিকল্পনা কিংবা যেকোনো কিছুর জন্যই ভালো হবে। এগুলো আসলে পরিস্কার থাকাটা অবশ্যই জরুরি। চিঠিটা অবশ্যই ছয় মাসের ছিল না। যদি আপনারা চিঠিটা দেখেন তাহলে দেখবেন যে ২২ নভেম্বর না এমন কিছু ছিল। বিশ্বকাপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত।’