‘আমার কিছুই বলার নেই, শুধু এটুকু বলব, আমি মজলুম’

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক- প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ার পর চাকরি হারিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। সৎ ও সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি থাকা সত্ত্বেও ‘অজ্ঞাত’ কারণে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর শরীফ বলেন, ‘আমার কিছুই বলার নেই। শুধু এটুকু বলব, আমি মজলুম।’

শরীফ উদ্দিন জানান, পটুয়াখালীতে বদলির পরও তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। হুমকি পেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় জিডি করেন। এর ১৬ দিন পর গতকাল বুধবার তাকে চাকরিচ্যুতির আদেশ দেয় দুদক।

দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা ওই আদেশে উল্লেখ করা হয়, আদেশের দিন থেকেই শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি কার্যকর হবে। আদেশে আরও বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পটুয়াখালীতে কর্মরত দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন তিনি।

এদিকে, শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন তার সহকর্মীরা। তারা বলছেন, শরীফ উদ্দিন সৎ ও সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

জানা গেছে, শরীফ উদ্দিন চট্টগ্রামে কর্মরত অবস্থায় কক্সবাজারে ৭২টি প্রকল্পে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, রোহিঙ্গা নাগরিকদের ২০টি এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি ও কর্ণফুলী গ্যাসে অনিয়মসহ বেশ কিছু দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মামলা করেন। এতে তিনি অনেকের ‘চক্ষুশূল’ হয়ে উঠেছিলেন।

গত বছরের ১৬ জুন শরীফ উদ্দিনকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালীতে বদলি করা হয়। আর এখন তাকে ‘অজ্ঞাত’ কারণে চাকরিচ্যুত করা হলো।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে দুদকের একাধিক কমিশনার ও দুদক সচিবের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, এত দিন তারা বিভিন্ন চলচ্চিত্রে দেখেছেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর কারণে সৎ পুলিশ কর্মকর্তা কিংবা সরকারি কর্মকর্তাকে প্রভাব খাটিয়ে চাকরিচ্যুত করা হয়। এখন তা বাস্তবে দুদকে দেখলেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এলাকায় বড় প্রকল্প ও সরকারি অফিসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শরীফ উদ্দিনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত সাহসী। তিনি কারও সঙ্গে আপস করেননি। তাকে কেন চাকরিচ্যুত করা হলো, তা দুদকের পরিষ্কার করা উচিত। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দুদক, সরকার ও সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আবেদন জানান আখতার কবির চৌধুরী।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *