ইসলাম অভিশাপ দেওয়াকে পছন্দ করে না। আপন সন্তানকে তো দূরের কথা জীবজন্তু এমনকি জড় পদার্থকে অভিশাপ দেওয়াও সমর্থন করে না। জাবির (রা.) বলেন, বাতনে বুওয়াত যুদ্ধের সফরে (সা.)-এর সঙ্গে পথ চলছিলাম। তিনি মাজদি ইবন আমর জুহানি (রা.)-কে খুঁজছিলেন।
পানি বহনকারী উটগুলোর পেছনে আমাদের মধ্য থেকে পাঁচজন, ছয়জন ও সাতজন করে পথ চলছিল। উকবা নামক এক আনসারী ব্যক্তি তাঁর উটের পাশ দিয়ে চক্কর দিল এবং তাকে থামাল। তারপর তার পিঠে উঠে আবার তাকে চলতে নির্দেশ দিল। উটটি তখন একেবারে নিশ্চয় হয়ে গেল। তিনি তখন বললেন ধুত্তরি! তোর ওপর আল্লাহর অভিশাপ। এ শুনে রাসুল (সা.) বলেন, নিজের উটকে অভিশাপদাতা এই ব্যক্তিটা কে? তিনি বলেন, আমি হে আল্লাহর রাসুল। তিনি (সা.) বলেন, ‘তুমি এর পিঠ থেকে নামো। তুমি আমাদের কোনো অভিশপ্তের সঙ্গী করো না। তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে, তোমাদের সন্তান-সন্তুতি এবং তোমাদের সম্পদের বিরুদ্ধে দোয়া করো না। তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন মুহূর্তের জ্ঞানপ্রাপ্ত নও, যখন যা কিছুই চাওয়া হয় তিনি তোমাদের তা দিয়ে দেবেন। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৭০৫)
হাদিসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলী কারী (রহ.) বলেন, অর্থাৎ তোমরা কোনো মুহূর্তেই নিজের বিরুদ্ধে, নিজের সন্তান বা সম্পদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করো না। কারণ হতে পারে যে সময় তুমি দোয়া করছ, তা দিনের মধ্যে ওই সময় যখন যা-ই দোয়া করা হোক না কেন তা কবুল করা হয়। তোমরা তো এ সময় সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞানপ্রাপ্ত নও। (মিরআতুল মাফাতিহ : ৭/৭০৩)
নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে বদদোয়া করার অর্থ নিজেই নিজেকে হত্যার তথা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া। আর এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)