অবশেষে বাতিল হলো আমির হামজার স্বাধীনতা পুরস্কার

জাতীয়

সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারে মনোনীত হওয়া ‘বিতর্কিত ব্যক্তি’ মো. আমির হামজার পুরস্কার (মরণোত্তর) বাতিল করেছে সরকার।সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে আমির হামজার নাম বাদ দিয়ে আজ নতুন তালিকাও প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

গত ১৫ মার্চ মঙ্গলবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় ১০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। তাতে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করা হয় প্রয়াত আমির হামজাকে।অচেনা এই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননায় ভূষিত করায় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

বিতর্কের পর আমির হামজার লেখা ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তিনটি বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। মরণোত্তর পদকপ্রাপ্ত সাহিত্যিক আমির হামজার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরিশাট গ্রামে। ওই গ্রামসহ সারাজেলার মানুষের কাছে তিনি পালাগানের শিল্পী কিংবা কবি হিসেবে পরিচিত। তবে বরিশাট গ্রামে ১৯৭৮ সালে শাহাদত ফকির নামে একজন কৃষক এবং শিল্পী নামে আড়াই বছরের একটি শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সর্বশেষ ২০০৭ সালেও

স্থানীয় একটি গ্রাম্য মারামারির ঘটনায় তিনি আসামি ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।এ ঘটনায় তারা দুই ভাইসহ মোট ৬ জনের কারাদণ্ড হয়। আট বছর জেল খাটার পর ৯১ সালের দিকে বিএনপি সরকার গঠন করলে মাগুরার মন্ত্রী মজিদুল হকের সহায়তায় বেরিয়ে আসেন তারা। ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমা পান এই আমির হামজাও। আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি।

এ বিষয়ে আসাদুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি যুগান্তরকে বলেছেন, তার বাবা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন ঘটনাটি সত্য। এই বিতর্কিত ব্যক্তি আমির হামজার পুরস্কার বাতিলের মাধ্যমে এবার ব্যক্তি পর্যায়ে স্বাধীনতা পুরস্কার ৯টিতে দাঁড়াল। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালেও সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে সেটি বাতিল করেছিল সরকার।ওই বছর অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এসএম রইজ উদ্দিন আহম্মদকে এই পুরস্কারে মনোনীত করা হয়েছিল।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *