নিউজ ডেষ্ক- অবশেষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ’র অনুমতি পেয়েছে দেশীয় ব্যবস্থাপনায় অ্যাপভিত্তিক পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার ইকো-ট্যক্সি ‘বাঘ’। দেশের রাস্তায় এখন থেকে দাপিয়ে বেড়াবে পরিবেশবান্ধব বাহনটি। তৈরি করেছে বাঘ ইকো মোটরস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৪২ মাস পর রবিবার (২০ মার্চ) স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলো। বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ‘বাঘ’কে সরকার রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। এখন বড় পরিসরে উৎপাদন শুরুর পালা।
তিনি বলেন, ‘দেশের রাস্তায় বাঘ-এর চলতে আর বাধা নেই। দেশে এই প্রথম বৈধতা পেলো পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার। ঢাকার রাস্তায় যা শিগগিরই নামবে। বাংলাদেশের মানুষ দেখবে আমরা বিশ্বমানের একটি বাহন বানিয়েছে। অচিরেই বৈদ্যুতিক বাস ও ট্রাক রাস্তায় নামাবো। এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে মূলত নতুন যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা এই গাড়ি অচিরেই দেশের পাশাপাশি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন সড়কে দাপিয়ে বেড়াবে। বাঘ অনুমোদন পাওয়ায় যাত্রীরা একদিকে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবে, অন্যদিকে ভাড়াও কমে আসবে।’
কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই গাড়িতে চার্জের বিদ্যুৎ ব্যয় কমবে। আগে যেখানে প্রতি ইউনিটে খরচ হতো ১৭ টাকা, বাঘ-এ হবে ৭ টাকা।
তিনি আরও বলেন, প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়বে ৪০-৪৫ পয়সা। একবার চার্জে চলবে ১২০ কিলোমিটার। সৌরবিদ্যুতে চলবে আরও ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার। ব্যাটারিতে থাকছে পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি। এছাড়া সার্ভিস ওয়ারেন্টি পাওয়া যাবে দুই বছর। শব্দহীন গাড়িটি প্রথম পক্ষ কর্তৃক বিমাকৃত থাকবে। রক্ষণাবেক্ষণ খরচ নেই বললেই চলে।
এর আগে গত ১৬ মার্চ বিআরটিএ থেকে অনুমতি পায় বাঘ। অনুমতিপত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট-এর সুপারিশ, এমিশন টেস্ট রিপোর্ট, কাগজপত্র এবং বিআরটিএ-র স্থায়ী টেকনিক্যাল কমিটির ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সভার সুপারিশ—এসব পর্যালোচনা করে ইকো-ট্যাক্সি ইফাইভ-সি মডেল ইলেকট্রিক থ্রি হুইলারের রেজিস্ট্রেশনের পূর্বানুমতি প্রদান করা হলো।’
ঢাকার গাজীপুরের কারখানায় ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক কিছু ‘বাঘ’ তৈরি হয়েছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব বলে মনে করেন জসিমুল ইসলাম বাপ্পি। গাড়িটির উদ্যোক্তা আরও জানান, ‘বাঘ’ রফতানির ব্যাপারে ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কম্বোডিয়া, সুদান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইথিওপিয়া এটি নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।
ইতোমধ্যে বাঘ রফতানির অনুমতি পেয়েছেন জানিয়ে বাঘ ইকো মোটরস-এর প্রেসিডেন্ট কাজী জসিমুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, গাজীপুরের হোতাপাড়ার কারখানায় প্রতিদিন তিন হাজার ‘বাঘ’ উৎপাদন হবে। বাপ্পির গর্ব, ‘৫০ বছর পর হলেও আমার হাত ধরে গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হয়েছে দেশে।’ এতে যে ৪০ লাখ বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলার বন্ধ হয়েছে, সেগুলোর মালিক-চালকরা নতুন করে নতুন প্রযুক্তির থ্রি হুইলারের বৈধতা নেওয়ার সুযোগ পাবে বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়া আগের থ্রি-হুইলারগুলো কিনে নেবে। এরপর সেগুলো রিসাইকেল করে সম্পূর্ণ নতুন ‘বাঘ’ হিসেবেই বাজারজাত করবে।