নিউজ ডেষ্ক– গোসলের প্রতি কিছু মানুষের অনীহা দেখা যায়। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে এই তালিকায় বড়দের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অনেকেই জীবনের কিছুটা সময় নানা কারণে গোসল না করেই কাটিয়ে দিয়েছেন। তবে সব রেকর্ডকে পিছনে পেলেছেন লন্ডনের জেন লিউসন।
মধ্যযুগে গোসল করা ছিল এক ধরনের বিলাসিতা। ফরাসি ইতিহাসবিদ জুলেস মিসলেট ইউরোপের মধ্যযুগকে ‘গোসল ছাড়া ১০০০ বছর’ হিসেবে বর্ণনা করে গেছেন। ইউরোপীয়দের মনে ধারণা ছিল, গোসল করলে রোমকূপের মধ্যে দিয়ে মানুষের দেহে রোগ-জীবাণু প্রবেশ করে এবং সেই কারণে তারা গোসল করতেন না।
স্পেনের রানি ইসাবেল তার পুরো জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেন। যেদিন তার জন্ম হয় এবং দ্বিতীয় ও শেষবার করেন তার বিয়ের দিন। এমনকি তাদের এতো বড় প্রাসাদে ছিল না একটি বাথরুম। তারা শরীরে সবসময় ব্যবহার করতেন নানান ধরনে সুগন্ধি। তবে জেনের বেলায় বিষয়টি ছিল পুরোটাই ভিন্ন।
৩০০ বছরের বেশি সময় আগে করা জেনের রেকর্ডটি এখনো কেউ দখলে নিতে পারেনি। ১৭০০ সালে লন্ডনের এক ধনী পরিবারে জন্ম হয় জেনের। ছোটবেলা থেকেই সবার খুব আদর আর আহ্লাদে বড় হয়েছেন তিনি। ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয়ে জেনের মা কখনো তাকে গোসল করাতেন না। এভাবেই জেন আস্তে আস্তে বড় হতে থাকেন।
জীবনের প্রথম দিকে তিনি একজন ধনী ব্যক্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে মাত্র ২৬ বছর বয়সে স্বামীকে হারান তিনি। একমাত্র মেয়েকে সাথে নিয়েই জীবন পার করেছেন জেন। আর বিয়ে করার কথা চিন্তাই করেননি। পুরো শহরে তিনি সবার বেশ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন। তার সৌন্দর্য এবং ফ্যাশন সচেতন তাকে পরিচিত করে তোলে সবার কাছে।
তবে তা ছিল সবার থেকে একেবারেই আলাদা। তার অদ্ভুত চেহারার কারণে তিনি স্থানীয় এলাকায় লেডি লুসন নামে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। তিনি যে ধরনের পোশাক পরতেন তা সমসাময়িক সময়ের ছিল না। এ ধরনের পোশাক সাধারনত পরা হতো জর্জ প্রথমের রাজত্বকালে।
জেন একটি কুসংস্কারে খুক বিশ্বাস করতেন। তার মনে হতো গোসল করলেই বুঝি শরীরে ঠান্ডা লেগে যাবে। এমনকি ঠান্ডা থেকে বাঁচতে প্রতিদিন তিনি চা খেতেন। শরীরে যাতে দুর্গন্ধ না হয় এজন্য তিনি সবসময় সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। তিনি নিজেকে ধোয়ার পরিবর্তে শূকরের চর্বি মাখতেন নিজের শরীরে। তার বিশ্বাস ছিল এতে শরীরের সব জীবাণু সহজে দূর হয়ে যাবে।