অতিরিক্ত লবণ অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়

স্বাস্থ্য

খাবারের স্বাদ বাড়াতে লবণের জুড়ি নেই। এক্ষেত্রে বলা চলে, যেকোনো খাবারের আসল স্বাদ পেতে লবনের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে মিষ্টি জাতীয় খাবারের কথা ভিন্ন। তবে প্রয়োজন হলেও সব খাবারই খেতে হবে পরিমিত। লবণের ক্ষেত্রেও একই।
তরকারিতে লবণ, বাইরের খাবারে লবণ। আবার অনেকে খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ খান। এভাবে প্রতিদিন কত পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা হয়, সেটার হিসাব আর রাখা হয় না। লবণ শরীরের জন্য প্রয়োজন। তবে অতিরিক্ত ক্ষতিকর।

লবণ মানেই সোডিয়াম, আর এই খনিজটির মাত্রা রক্তে যত বাড়ে, ততই পটাশিয়ামের পরিমাণ কমতে শুরু করে। যে কারণে ব্লাড ভেসেলের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। লবণ খাওয়ার পরিমাণে যদি নিয়ন্ত্রণ আনা না যায়, তাহলে ব্লাডপ্রেশার মারাত্মক বাড়তে শুরু করে। এমনটি হলে বাড়ে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কাও।

‘ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)’র তথ্যানুসারে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ২,৩০০ মি.লি. গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণ করা ঠিক নয়। যা প্রায় এক চা-চামচের সমান। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ)’ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ১,৫০০ মি.লি. গ্রাম পর্যন্ত সোডিয়াম গ্রহণের পরামর্শ দেয়।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা হলো-

পানি বা ফোলাভাবের সৃষ্টি

লবণাক্ত খাবার যেমন- চিপস, ভাজা খাবার ইত্যাদি খাওয়ার পরে পেটে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। কারণ সোডিয়াম-জাতীয় খাবার খাওয়ার পরে দেহে ফোলাভাব বা ভরাভাব অনুভূত হওয়া স্বাভাবিক। এমন ফোলা বা ভরা অনুভূত হওয়ার কারণ হল, বৃক্ক (কিডনি) দেহে সোডিয়াম ও পানি ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কাজ করে। বাড়তি সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণে দেহের বাড়তি পানি সংরক্ষণ করে রাখে।

পানির পিপাসা

অতিরিক্ত লবণ-জাতীয় খাবার খাওয়া মুখ শুষ্ক করে ফেলে। তাই তেষ্টা বৃদ্ধি পায়। এর কারণ হলো, দেহ সোডিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে পানির ঘাটতি অনুভব করে। শুধু নোনতা খাবার খাওয়াই না বরং লবণ ও গরম পানি দিয়ে ‘গারগল’ করা হলেও কয়েক মিনিট পরে মুখে শুষ্ক অনুভব হয়।

রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে

একবারে যথেষ্ট পরিমাণে নোনতা খাবার খাওয়া সাময়িকভাবে রক্তচাপ বাড়ায়। এর কারণ হলো, সোডিয়াম-জাতীয় খাবার রক্তের চাপ বাড়ায়। ফলে ধনীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে রক্ত প্রবাহিত হয়। তবে নোনতা খাবার খাওরার পরে রক্ত প্রবাহের এই ওঠা-নামা সবার মধ্যে দেখা দেয় না। তবে নিয়মিত সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রক্তচাপ বা ‘হাইপারটেনশন’য়ের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বাড়তি লবণ গ্রহণে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়: অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকি হিসেবে হৃদরোগের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে রক্তচাপের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে রক্তনালী ও ধমনী সংকুচিত হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে বিভিন্ন গবেষণায়। এর ফলাফল হৃদরোগ। এমনকি অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *