পদ্মা সেতু জুনেই খুলে দেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের

রাজনীতি

নিউজ ডেষ্ক- পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ পেছানো হয়নি। আগামী জুনেই উদ্বোধন করা হবে।’ বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে নিজ নির্বাচনি এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

দীর্ঘদিন পর নিজ এলাকায় ফেরার অনুভূতি ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এলাকার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কখনও বিচ্ছিন্ন হয়নি। অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, আইসিইউ প্রতিস্থাপন, খাদ্য এবং ত্রাণসামগ্রী দিয়েছি। বহুদিন মা-বাবার কবর জিয়ারত করতে পারিনি, তাই মনটা বিষণ্ন ছিল। যারা আমার ভোটার, তাদের মাঝে আসতে পেরে ভালো লাগছে। নিজের বাড়িতে এসেছি, নিজের খাবার খেয়েছি, নামাজ পড়েছি। আজ আমার অনেক ভালো লেগেছে।’

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গত ১৩ বছরে ২৬ বার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এখন বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনলে মানুষ হাসে। গত ১৩ বছরে আন্দোলনের ডাক দিয়ে পারলো না, পারবে কোন বছর? তাদের আন্দোলনে সবার প্রশ্ন, এই বছর না ওই বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর?’

ওবায়দুল কাদেরের হাতে ‘বীর ৭১ সম্মাননা’ পদক তুলে দিচ্ছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা
ওবায়দুল কাদেরের হাতে ‘বীর ৭১ সম্মাননা’ পদক তুলে দিচ্ছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা
এর আগে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কাদেরকে নিজ বাড়িতে পুলিশের গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তার হাতে ‘বীর ৭১ সম্মাননা’ পদক তুলে দেন ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এরপর বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন তিনি।

এদিকে, বিকাল ৩টায় কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে উপজেলা ডাক বাংলোয় ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আনম সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, নোয়াখালী পৌর মেয়র শহিদ উল্লাহ খান সোহেল, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৩ আগস্টের পর দীর্ঘ প্রায় ৩৩ মাস পর নিজ নির্বাচনি এলাকা কোম্পানীগঞ্জে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত এক বছর নানা ঘটনায় সমালোচনায় পড়তে হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে। আলোচনার-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে সংগঠনের ভেতর থেকেই। বড় ভাই ওবায়দুল কাদের ও ভাবির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বক্তব্য দেন আবদুল কাদের মির্জা। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বার বার সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। এতে স্থানীয়ভাবে নাজুক অবস্থায় পড়েছে সংগঠন। স্থানীয় রাজনীতিতে কাদের মির্জার বিরোধী অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। তাকে সমর্থন দিচ্ছেন কাদের মির্জার তিন ভাগনে। বাদল ও ভাগনেদের বিরুদ্ধেও কাদের মির্জা নানা অভিযোগ তোলেন। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের এ দ্বন্দ্ব-সংঘাতে কাদের মির্জার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ান তার ভাগনেরা। সেই বিরোধের জের ধরে গত কয়েক মাসে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ দুই জন নিহত হন। আহত হন প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী। পাল্টাপাল্টি ৭২টি মামলা হয়। এতে আসামি হন উভয়পক্ষের প্রায় সাত হাজার তৃণমূলের নেতাকর্মী। এখনও বাড়িছাড়া রয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *