মার্কিন এয়ার ফোর্সের একজন পাইলট শেষ পর্যন্ত বিমানের সিট ছেড়ে বের হয়ে আসতে বাধ্য হন।
এফ-৩৫ নামের ওই যুদ্ধবিমান আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় প্রায় ৫০ মিনিট ধরে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে ফোনালাপ করেন পাইলট। কিন্তু একটি গুরুতর ত্রুটি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। পরে বিমানটি আলাস্কার একটি রানওয়েতে বিধ্বস্ত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এ বছরের শুরুর দিকে যুদ্ধবিমানটি রানওয়ের দিকে ঘূর্ণায়মান হয়ে নেমে আসে এবং বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। তবে পাইলটকে নিরাপদে প্যারাশুট দিয়ে মাটিতে নামতে দেখা যায়।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নাক ও প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ারের হাইড্রলিক লাইনে বরফ জমে যাওয়ায় সঠিকভাবে ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ করেনি, আর সেটিই দুর্ঘটনার কারণ। উড্ডয়নের পর পাইলট ল্যান্ডিং গিয়ার ভাঁজ করতে চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে নামাতে গেলে নাকের চাকাটি এক পাশে বাঁকা হয়ে আটকে যায়।
সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় বিমানটি বারবার এমন আচরণ করে যেন সেটি মাটিতে রয়েছে। তখনই পাইলট ঘাঁটির কাছে উড়তে উড়তে লকহিড মার্টিনের পাঁচজন ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে ফোন কলে যুক্ত হন এবং প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সমাধানের চেষ্টা চালান।
পাইলট দুইবার “টাচ অ্যান্ড গো” অবতরণের চেষ্টা করেন নাকের চাকা সোজা করার জন্য, কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন। এতে পুরো ল্যান্ডিং গিয়ার জমে যায়।
বিমানের সেন্সরগুলো বারবার সংকেত দেয় যে, এটি মাটিতে রয়েছে, ফলে বিমানটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং পাইলটকে বাধ্য হয়ে ইজেক্ট করতে হয়।
এয়ার ফোর্সের পরিদর্শনে দেখা গেছে, নাক ও ডান দিকের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ারে থাকা হাইড্রলিক তরলের এক-তৃতীয়াংশই পানিতে মিশ্রিত ছিল। দুর্ঘটনার নয় দিন পর একই ঘাঁটিতে আরেকটি বিমানে অনুরূপ “হাইড্রলিক জমাট বাঁধা” সমস্যা দেখা দেয়, যদিও সেটি নিরাপদে অবতরণ করে। ঘটনাটি ঘটে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।
লকহিড মার্টিনের এফ-৩৫ কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরেই উৎপাদন ঘাটতি ও বিপুল ব্যয়ের কারণে সমালোচনার মুখে। যদিও এর দাম ২০২১ সালে প্রায় ১৩৫.৮ মিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৪ সালে কমে ৮১ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তির অংশ।
মার্কিন সরকারি হিসাবরক্ষণ দপ্তরের মতে, এফ-৩৫ প্রকল্প ২০৮৮ সাল পর্যন্ত চলবে এবং এর মোট ব্যয় ২ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিমান বিধ্বস্তের ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
সূত্র: এনডিটিভি