“সাধারান মানুষ না পারছে তেল কেনা ছাড়তে, না পারছে কান্না করতে”

বাংলাদেশ

নিউজ ডেষ্ক- তেল! ভোজ্যতেল, মানে সয়াবিন তেলের কথা বলছি। গত এক বছরে দাম বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে এসে ঠেকছে- যারা সংসার চালান, বাজার-সদাই করেন তাদের কাহিল অবস্থা। না পারছে তেল কেনা ছাড়তে না পারছে কান্না করতে! বাজারে গিয়ে দোকানে গিয়ে শুধু তেল কিনলে তো হয় না, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনতে হয়। তেল কিনে যদি পকেট ফাঁকা হয়ে যায় অন্যান্য জিনিসপত্র কীভাবে কিনবে মানুষ।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে চাল-ডালের পরই তেলের নাম উচ্চারণ হয়। এরপর আটা-ময়দা, চিনি। সম্প্রতি শুধু তেল নয় উল্লেখিত নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসেরই মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। চালের দাম বেড়েছে, ডালের দাম বেড়েছে, আটা-ময়দার দাম বেড়েছে, চিনির দাম বেড়েছে।

সবচেয়ে বেশি- মানে খুব বেশি দাম বেড়েছে ‘সয়াবিন তেল’র দাম। সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি সয়াবিন তেলে সীমাবদ্ধ থাকলেও বলতাম ঠিক আছে! কারণটা শুনুন। আমরা সকাল-বিকাল-রাত, মানে ২৪ ঘণ্টা যেসব খাবার খেয়ে বেঁচে থাকি এর অধিকাংশই তৈরি করতে সয়াবিন তেলের ব্যবহার অপরিহার্য।

তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রেস্তোরাঁয় কোনো খাবারের দাম বাড়েনি? বেকারির কোনো খাবারের দাম বাড়েনি এই তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে? রেস্তোরাঁ ও বেকারির খাবারের কেউ কেউ মূল্যবৃদ্ধি করেননি! তবে তারা কী করেছেন? হ্যাঁ, তারা চমৎকার কায়দায় পণ্যের আকার ছোট করেছেন। যে রেস্তোরাঁয় আগে নাস্তা হিসেবে একটা সিঙ্গারা খেলে হয়ে যেত, সে রেস্তোরাঁয় এখন দু-তিনটা সিঙ্গারা খেতে হয়। কারণ ওই রেস্তোরাঁয় দাম বাড়েনি, কিন্তু সিঙ্গারা, সমুচা হয়ে গেছে বড় পেঁয়াজুর আকারে।

যারা আকার ছোট করেনি তারা দাম বাড়িয়েছে। কেউ কেউ মূল্যবৃদ্ধি ও আকার ছোট দুটোই করেছে। এভাবে সব খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে মাছ, মাংস, তরিতরকারির দামও আগের অবস্থানে নেই। এসবেরও মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে সংসার চালাতে। মনে হচ্ছে এ সময়ে দ্রব্যমূল্য যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, গত এক যুগে এমন নাকাল অবস্থা আর হয়নি। শুধু এক ‘সয়াবিল তেল’র কারণে বহু খাদ্যের দাম বেড়েছে। অর্থাৎ সয়াবিন সে একা দামি হয়ে যাচ্ছে না, অন্যান্য খাদ্যপণ্যকেও সাথে নিয়ে চলছে!

আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী, যিনি আগে ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা- তার কাছে হয়তো মূল্যবৃদ্ধির যুক্তি আছে। তবে এই যুক্তি দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগব হবে না। এমনকি মানুষের মনেও সান্ত্বনা পাবে না। যে কোনো উপায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমাতে পারলেই জনজীবনে স্বস্তি আসবে। অতএব দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ নয়, বলছি দ্রব্যমূল্য (নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের) কমান। পরে নিয়ন্ত্রণও করুন। দেশের সাধারণ জনগণের জীবনে স্বস্তি ও শান্তি বজায় রাখুন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *