দুই শর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক

গাজার বিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শনিবার (২৮ জুন) আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “আমি যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমাদের ধারণা, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।”

এই মন্তব্য এমন এক সময় এলো, যখন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সেখানে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৭২ জন, আহত হয়েছে আরও ১৭৪ জন। নিহতদের মধ্যে ত্রাণ নিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারানো ফিলিস্তিনিরাও রয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৫৬ হাজার ৩৩১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৩২ জন আহত হয়েছেন। দুই বছরের কাছাকাছি সময় ধরে চলমান এই সংঘাত আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি অভিযান বন্ধ এবং দখলকৃত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারই হবে যুদ্ধবিরতির মূল শর্ত। একইসঙ্গে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন না করার নিশ্চয়তা চাওয়া হচ্ছে ইসরায়েল থেকে।

এদিকে গাজা কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে। প্রভাবশালী ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন ইসরায়েলি কমান্ডাররা। গাজার পক্ষ থেকে একে সরাসরি ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আল জাজিরা আরও জানায়, ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ জরুরি ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় সেখানকার ২১ লাখ মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে নিয়োজিত বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দপ্তর জানায়, “যুদ্ধবিরতি বিষয়ে কোনো তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা অবগত নই।”

গাজা ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে নিতে ইসরায়েলের কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে গাজা পরিস্থিতি, ইরান ও নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *