এবার ইসরায়েল খালি করার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্যে আবারও যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। ইসরায়েল ও ইরানের চলমান উত্তেজনা এবার ভয়াবহ মোড়ে পৌঁছেছে। তেহরান জানিয়েছে, তারা প্রস্তুত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিজস্ব জনগণকে। এমন টানটান পরিস্থিতিতে বিশ্ব তাকিয়ে আছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে। তিনি কি পারবেন এই সংঘর্ষ থামাতে, নাকি পরিস্থিতি আরও জটিল হবে?

এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল চালায় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের সামরিক অভিযান। এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে আঘাত হানা। হামলায় কেঁপে ওঠে তেহরানের একাধিক স্থাপনা। নিহত হন ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনীর কমান্ডার হোসেন সালামী, সামরিক প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরী ও বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২২৪ জন এবং আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি।

১৬ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ঘোষণায় জানানো হয়, এবার এমন প্রতিশোধ আসছে, যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। আগের প্রতিক্রিয়াগুলো ছিল কেবল প্রস্তুতি। এবার যে হামলা হবে তা হবে তীব্র এবং সর্ববৃহৎ। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এবার ব্যবহার করতে পারে তাদের সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র—সেজ্জিল ও গাধার এইচ—যেগুলো একটি বড় শহর ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে।

ইরানের এই হুমকির পর ইসরায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দাদের বোমা শেল্টারের কাছে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, ইরানের রেভলিউশনারি গার্ড সরাসরি তেল আবিবের নাগরিকদের হুশিয়ারি দিয়ে জানায়—বাঁচতে চাইলে শহর দ্রুত ছাড়তে হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইসরায়েলের এই হামলার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। এবার এমন প্রতিশোধ নেওয়া হবে, যা ইতিহাস মনে রাখবে। এটা শুধুই মৌখিক হুমকি নয়, বরং বাস্তবায়নের জন্যই প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের সামাজিক মাধ্যমে ইরানিদের উদ্দেশে হুশিয়ারি দিয়েছেন—তেহরান দ্রুত খালি করতে হবে। তার এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে—তিনি কি এই সংঘাত থামাতে পারবেন, নাকি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ দিকে এগোবে?

মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তেজনা শুধু অঞ্চল নয়, পুরো বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সময় আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগের। প্রতিটি ভুল পদক্ষেপ এ অঞ্চলকে ঠেলে দিতে পারে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *