নারী সহকর্মীকে ‘কুপ্রস্তাব’, যা বললেন এনসিপি নেতা

রাজনীতি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার নিজ দলের এক নারী নেত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ দেওয়ার অভিযোগে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন। এ বিষয়ে একটি কথোপকথনের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক আরও তীব্র হয়। একদিন চুপ থাকার পর মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে নিজের ফেসবুক পোস্টে তুষার অভিযোগ ও পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন।

ফেসবুক পোস্টে সারোয়ার তুষার লিখেছেন:

“আমি নিখুঁত নই। মানুষ হিসেবে আমার ভুল হতেই পারে, এবং তা শুধরে নিতে আমি প্রস্তুত। কিন্তু আমি কোনো অপরাধ করিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেভাবে আমার বিচার ও ব্যক্তিগত আক্রমণ চালানো হচ্ছে, তা অপ্রত্যাশিত ও অনুচিত। এই smear campaign সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তিনি বলেন, দলের কেন্দ্রীয় এক নারী সহকর্মীকে জড়িয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ভিডিও এবং ছবির মাধ্যমে যেভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে, তা ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়। “এই সহকর্মীরা সম্মানিত নারী। রাজনীতির বাইরে তাদের ব্যক্তিগত জীবন রয়েছে। তাদের নিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার শুধু অনৈতিকই নয়, নির্মমতাও।”

সারোয়ার অভিযোগ করেন, তিন মাস আগের একটি ব্যক্তিগত কথোপকথনের অংশবিশেষ বিকৃতভাবে প্রকাশ করে তার ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে। “ব্যক্তিগত কথোপকথন অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করা গুরুতর অনৈতিক কাজ।”

তিনি আরও বলেন, “পূর্বেও আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছবি বিকৃত করে smear campaign চালানো হয়েছে। আমি কখনো কাউকে হুমকি দিইনি। বরং রাজনৈতিক সমালোচনার ক্ষেত্রেই আমি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখি। ব্যক্তিগত চরিত্র হননে আমি বিশ্বাসী নই।”

সারোয়ার তুষার জানান, এনসিপি তাকে ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিতে বলেছে। তিনি লিখিতভাবে দলের কাছে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানান। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দয়া করে দলের কোনো নারী সহকর্মী বা অন্য কোনো নারীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করবেন না।”

পোস্টের শেষাংশে তিনি বলেন, “আমি আরও পরিণত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব। যাঁরা আমাকে সমালোচনা করেন, তাঁদের প্রতিও আমার আবেদন—রাজনৈতিক বিরোধিতা যেন ব্যক্তিগত আক্রমণে রূপ না নেয়। বাংলাদেশপন্থার জয় হোক।”

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে আসা নৈতিক স্খলনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনসিপি’র পক্ষ থেকে সারোয়ার তুষারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তাকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে দলের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *