নিউজ ডেষ্ক- দেশ থেকে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলচে টাকা পাচার। গত ৬ বছরে দেশের চার লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা (৪৯৬৫ কোটি ডলার) বিদেশে পাচার হয়েছে। এ হিসাবে গড়ে প্রতি বছর দেশ থেকে পাচার হচ্ছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। যেখানে ২০১৫ সালেই পাচার হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি।
আর এ সময়ে বৈদেশিক বাণিজ্যের ১৮ শতাংশই ছিল ভুয়া। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। শুধু এক বছরে হওয়া পাচার করা অর্থ দিয়েই তিনটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব।
জিএফআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারনত ২টি প্রক্রিয়ায় এই অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে আছে বিদেশ থেকে কোন পণ্য আমদানির সময় তার মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)।
তবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তথ্য প্রকাশ করে সংস্থাটি। শুধু ২০১৫ সালের তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের রিপোর্ট তৈরি করে তারা। কেননা এ সময়ের পর জাতিসংঘকে বৈদেশিক বাণিজ্যের কোনো তথ্য দেয়নি বাংলাদেশ।
এ ব্যাপারে জিএফআইর সিনিয়র ইকোনমিস্ট রিক রাউডেন বলেন, “অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশ জাতিসংঘকে বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত তথ্য নিয়মিত দিয়ে আসছিল। কিন্তু ১৬, ১৭ এবং ২০১৮ সালের কোনো তথ্য জমা দেয়নি দেশটি। ফলে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।”
জিএফআইর তথ্য মতে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত গত ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে চার হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ৮৮ টাকা ধরলে বাংলাদেশী টাকায় দাঁড়ায় চার লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা।
যা বাংলাদেশের চলতি বছরের (২০২১-২০২২) জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান। প্রতি বছর দেশ থেকে গড়ে পাচার হয়েছে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। টাকা পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম।
এছাড়া অর্থ পাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই রয়েছে বাংলাদেশের নাম। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ১৮ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে।