পঞ্চাশ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে কবর খুঁড়ে গেছেন মনু মিয়া। কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার এই মানুষটি শোকাহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন নিঃস্বার্থভাবে—এক হাতে কোদাল, পিঠে ব্যাগ, সঙ্গে বিশ্বস্ত এক ঘোড়া।
জীবনের সায়াহ্নে এসে হাসপাতালের বিছানায় লড়ছেন মনু মিয়া। আর ঠিক এমন সময়েই এলো আরেক হৃদয়বিদারক খবর—নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তার প্রিয় সঙ্গী ঘোড়াটিকে।
মিঠামইনের হাশিমপুর গ্রামে একটি মাদ্রাসার পাশে পানির মধ্যে পড়ে ছিল ঘোড়াটির নিথর দেহ। বুকে ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাত। এই নৃশংসতায় হতবাক স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন—এ হত্যার বিচার চাই।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম জানালেন, স্বামীর শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাই এখনো জানানো হয়নি ঘোড়ার মৃত্যুর খবর। তিনি বললেন, “মনু কারও ক্ষতি করেনি। সেই মানুষটার এমন দুঃসময়ে কেউ তার একমাত্র সাথীকেও মেরে ফেলবে, এটা কল্পনাও করতে পারছি না।”
পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে কবর খোঁড়ার কাজ দ্রুত করতে জমি বিক্রি করে এই ঘোড়াটি কিনেছিলেন মনু মিয়া। সেই থেকেই ঘোড়াটি ছিল তার একমাত্র যাত্রীসঙ্গী।
এখন মনু মিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আর তার বিশ্বস্ত সঙ্গী—ঘোড়াটি—চিরতরে বিদায় নিয়েছে পাশবিক এক হামলায়। সমাজের প্রতি নিঃস্বার্থভাবে নিবেদিত এই মানুষটির পাশে দাঁড়ানো এখন আমাদেরই দায়িত্ব।