হাজতখানায় বিছানায় শুয়ে সিগারেট হাতে গ্রেফতার বিএনপির সাবেক নেতা

Uncategorized

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে বিএনপির সাবেক নেতাকে গ্রেফতারের পর থানায় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে

ওসি মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে হাজতের মধ্যেই ব্যারাক থেকে খাট এনে ভিআইপি বিছানা করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে কথা বলারও সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার বেশ কিছু ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতা নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আর বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গোসাইরহাট থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সিআর (২০১/২৪) মামলার এক বছর দুই মাস সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি লিটন হাওলাদার (৪৮)। ওই মামলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদ আলম। তবে তাকে অন্যান্য আসামিদের থেকে আলাদাভাবে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থানার একটি কক্ষে রাখা হয়। পরের দিন তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এরইমধ্যে তাকে হাজতে বিশেষ সুবিধায় রাখা বেশ কিছু ছবি গণমাধ্যমের হাতে চলে আসে।

ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, লিটন হাওলাদার নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে থানার হাজতখানায় রাখা হয়েছে। সেখানে থাকা একটি খাটে তিনি আয়েশি ভঙ্গিতে সিগারেট হাতে নিয়ে বসে মুঠোফোনে কথা বলছেন। এমন অবস্থায় কোনো এক ব্যক্তি গোপনে তার ছবিগুলো মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদ আলম বলেন, অন্য একটি মামলায় জামিন পেয়ে আসামি লিটন হাওলাদার দেখা করার জন্য থানায় আসেন। তবে তিনি আরও একটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বলে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়। এসময় আসামি লিটন হাওলাদার নিজেকে অসুস্থ দাবি করলে আমি তাকে হাজতখানায় থাকার কথা বলি।

হাজতখানায় আসামির জন্য বিছানার ব্যবস্থা ও মোবাইলে কথা বলতে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে কি না এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, এটা কে বা কারা করেছে আমার জানা নেই, কেউ এটা করে থাকলে অবশ্যই আমি খতিয়ে দেখবো। তবে মানুষ ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি আমারও হতে পারে। আর আমাদের হাজতখানার পাশেই প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি কক্ষ রয়েছে। যেখানে অসুস্থ রোগীদের বিশেষ প্রয়োজনে রাখা হয়।

বিশেষ কোনো সুবিধা নিয়ে এ কাজ করার ব্যাপারটি অস্বীকার করলেও এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন ওসি।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভীর হোসেন বলেন, আসামি যদি অসুস্থ থাকে সেক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে রেখে পুলিশি তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া ভেতরে মোবাইলে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেওয়া অনুসন্ধান করে দেখা হবে। থানার ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলে কী ঘটনা ঘটেছে তা জানানো যাবে। আর ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *