স্বর্ণের বাজারে বড় ধাক্কা, লাফিয়ে কমছে দাম

অর্থনীতি

বৈশ্বিক অস্থিরতা, যুদ্ধাবস্থা, জ্বালানি তেলের দোলাচল আর ডলারের দামের ভাঙচুর—সব মিলিয়ে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ছিল রেকর্ড উচ্চতায়। কিন্তু হঠাৎ করেই ধাক্কা খেল এই দাম। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হারে পরিবর্তনের ইঙ্গিতে এখন অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে উঠেছে সোনার বাজার।

বিশ্লেষকদের মতে, সুদের হার কমানোর বিষয়ে ফেডারেল রিজার্ভ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। এর প্রভাবে বিনিয়োগকারীরা এখন সোনার চেয়ে অন্যান্য মুনাফা-আসন্ন খাতে ঝুঁকছেন। কারণ, সুদের হার বাড়লে স্বর্ণ বিনিয়োগে আকর্ষণ হারায়।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্স ৩৩৫০ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় ০.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একইসাথে প্লাটিনামের দাম কিছুদিন আগেই এক দশকের সর্বোচ্চ স্পর্শ করলেও এখন সেখানে মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে।

স্বর্ণের দামের উত্তাল ঢেউ কিছুটা স্তিমিত হয়েছে দুবাইয়ের বাজারেও। ‘গালফ নিউজ’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন শুক্রবার সকালে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম নেমে এসেছে প্রতি গ্রাম ৪০৬ দিরহামে।

* ২২ ক্যারেট: ৩৭৬ দিরহাম

* ২১ ক্যারেট: ৩৬০.৫০ দিরহাম

* ১৮ ক্যারেট: ৩০৯ দিরহাম

যেখানে মাসখানেক আগেই ধারণা করা হচ্ছিল, ২২ ক্যারেট সোনা ৪০০ দিরহামের সীমা ছাড়িয়ে যাবে, সেখানে এই দাম পতন বাজারে বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, ২০২৫ সালের শেষ ভাগ থেকে ২০২৬ সালের শুরু পর্যন্ত সোনার দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এমনকি তা ৩০০০ ডলারের নিচে নামার আশঙ্কা রয়েছে, যা গত কয়েক বছরের তুলনায় বড় ধরনের ধস বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

যুদ্ধ, অস্থিরতা ও বাজারে অনিশ্চয়তার কারণে স্বর্ণের দাম হয়তো অস্থায়ীভাবে কিছুটা কমবে, তবে পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত এই মূল্যবান ধাতুর চাহিদা আবার বাড়তে পারে। কারণ, সুদের হার কমার গুঞ্জন উঠলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ফের বাড়ে স্বর্ণে, যেটি দীর্ঘমেয়াদে দাম বাড়ার আরেকটি ইঙ্গিত।

এখন যারা স্বর্ণ কিনতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটা হতে পারে ভালো সুযোগ। তবে বাজারে প্রবেশের আগে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও সুদের হারের গতিপ্রকৃতি ভালোভাবে বুঝে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *