শেখ হাসিনার হাতে ঈদের মোরগ-পোলাও খেলেন ছেলে

রাজনীতি

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ঈদ-উল- আজহার আগেই ভারতে এসেছেন। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে, জয় মায়ের সঙ্গে ঈদ কাটিয়েছেন। এখনও তিনি ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এই প্রথম পরিবারের কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বর্তমানে নয়াদিল্লিতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় সেফ হাউসে রয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জয়ের বর্তমানে কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের কোনও পরিকল্পনা নেই। তার সফরসূচির বিস্তারিতও জানা যায়নি। জয়ের ভারত সফর এবং মায়ের সঙ্গে দেখা করার ব্যাপারে ভারত সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

শেখ হাসিনার পরিবার বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ঈদুল আজহায় আমেরিকার ভার্জিনিয়া থেকে দিল্লিতে এসে শেখ হাসিনার সঙ্গে সময় কাটিয়ে পরদিনই ফিরে গেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। এর আগে গত শুক্রবার রাতে এক সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লিতে পৌঁছান জয়। গোপন আশ্রয়ে একমাত্র পুত্রকে সামনে পেয়ে বিহ্বল হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। অশ্রুসজল চোখে মাকে আঁকড়ে ধরেন জয়ও।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আরও জানায়, মায়ের হাতের মোরগ পোলাও খেতে বড্ড ভালোবাসেন জয়। তাই ঈদের দিন সকালেই রান্নাঘরে হাঁড়ি-হাতা-খুন্তি নিয়ে রান্নায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দুপুরে জয়ের পাতে তুলে দেন নিজের হাতে রাঁধা ছেলের প্রিয় মোরগ পোলাও। সঙ্গে ছিল মাছ, সবজি ও ডাল। জয়ও তারিয়ে তারিয়ে খেয়েছেন মোরগ পোলাও। আর এক টুকরো ‘রান’ (লেগপিস) যাতে নেন ছেলে, মৃদু জোরাজুরিও করেন হাসিনা। জয় বলেন, ‘আর না… আর পারব না, প্লিজ়!’

আর জানা যায়, গত মার্চের শেষ দিনটিতে ছিল ঈদুল ফিতর। তার আগের দিন দিল্লি থেকে এক জন আমেরিকা যাচ্ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ধরতে যাওয়ার পথে তার হাতে পৌঁছায় একটি ক্যাসারোল।

অতি যত্নে সেটি নিয়ে তিনি পৌঁছিয়ে দিয়েছিলেন ভার্জিনিয়ার ওয়াজ়েদ কনসালটেন্সি ইনকর্পোরেটের কর্ণধার সজিব ওয়াজেদের কাছে। চওড়া হাসি হেসে সেই পরিচিতজনের হাত থেকে ক্যাসারোলটি গ্রহণ করেছিলেন জয়। আর সেই ক্যাসারোলে ছিলো দিল্লি থেকে পাঠানো শেখ হাসিনার নিজের হাতে তৈরি সেই মোরগ পোলাও।

এদিকে ঈদ কাটিয়ে রবিবারই ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন হাসিনা-পুত্র। দিল্লির উচ্চ মহল থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় তার এই ঝটিকা সফরকে ‘একান্তই ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক বিষয়’ আখ্যা দিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

জয়ের ঘনিষ্ঠ মহল বলছেন, দিল্লি ও কলকাতায় পূর্ব পরিকল্পনা মতো সফরটি এ মাসের শেষ দিকে হতে পারে। এই ছোট্ট সফরটি একান্ত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক হওয়ায় তারা কোনও মন্তব্যই করছেন না। জয়ের সফরসঙ্গীর কথায়, ‘আমরা আজই ফিরে এসেছি। টেকনিক্যাল কিছু বিষয়ের জন্য এই সফর নিয়ে কিছুই বলা যাবে না।’ তবে এ মাসের শেষ দিকেই আবার দেখা হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি। সেটা হবে সরকারি সফর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *