লাফিয়ে বাড়ল জ্বালানি তেলের দাম

সারাদেশ

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর বিশ্ববাজারে আবারও উদ্বেগের সঞ্চার হয়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি খাতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। হামলার পরদিনই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়।

সোমবার (২৩ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মার্কিন স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় হামলার পর রোববার রাতেই তেলের ফিউচার মার্কেটে বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, ফলে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৪৭ ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৫৯ ডলার, যা ৩ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধিকে নির্দেশ করে।

তবে শেয়ারবাজারে এর উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ডাও ফিউচারস সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক ফিউচার সূচকেও শূন্য দশমিক ৬ থেকে ৭ শতাংশ হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে।

এই অস্থিরতার মধ্যেই ডলারের মান বেড়েছে প্রায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা ও সংকটের সময় সাধারণত ডলারের চাহিদা বাড়ে। তবে মার্কিন নীতিগত অবস্থান ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এই প্রবণতাকে কতটা দীর্ঘস্থায়ী করবে, তা নিয়ে সংশয় আছে অর্থনীতিবিদদের।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। বিনিয়োগ বাজারে এই অনিশ্চয়তা সরাসরি প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে জ্বালানি খাতে।

এরই মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট বিশ্ববাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল ও গ্যাস সরবরাহ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে, এই রুটটি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে সরবরাহ ঘাটতির কারণে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এমনকি উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমদানি না করা দেশগুলোকেও উচ্চ দামের ধাক্কা সামলাতে হবে।

ইতিহাসে দেখা গেছে, ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় এই অঞ্চলেই ‘ট্যাঙ্কার যুদ্ধ’ সংঘটিত হয়েছিল, তবে তখনো হরমুজ প্রণালী পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। কারণ উপসাগর থেকে বৈশ্বিক জ্বালানি রপ্তানির জন্য এই রুট ছাড়া কার্যত কোনো বিকল্প পথ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *