যে ভুলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, জানালেন

জাতীয়

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে পরিস্থিতি এমন হবে যে আওয়ামী লীগ

ফের ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে। তাঁর ব্যাখ্যায়, আওয়ামী লীগের শক্ত ভোক্তা (ভোটব্যাংক) পিআর নির্বাচনে তাদের ফেরার পথ সহজ করে দেবে। তিনি একই সঙ্গে জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, পিআর নিয়ে তাদের অবস্থান ভুলভাবেই নেওয়া হয়েছে।

মান্না বলেন, জামায়াতে ইসলামী তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবং তিন দিনের বিক্ষোভেরও ডাক দিয়েছে। কিন্তু তার প্রশ্ন, এই বিক্ষোভের দাবি কার উদ্দেশ্যে? কার কাছে দাবি পৌঁছাবে? তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যে সরকার আছে, সে প্রথমে বলছে দরজা খোলা; তারা যখন খুশি পালিয়ে যাবে। সেই পরিস্থিতিতে শুধু পিআর দাবি করে কী ফল পাওয়া যাবে?

তিনি আরও বলেন, পিআর কি সঠিকভাবে বোঝানো হয়েছে না, এই দিকটিও অনস্বীকার্য। পাবলিকের কাছে পিআর নিয়ে গেলে সাধারণ মানুষ সহজে বোঝবে না, কারণ আমাদের দেশের মানুষ এখনও প্রার্থী দেখে ভোট দেওয়ার অভ্যস্ত। পিআর পদ্ধতির বাস্তব প্রভাব এবং তার জটিলতা বোঝাতে সময় এবং প্রচেষ্টা লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন মান্না।

মান্না এক গুচ্ছ রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, মেজরিটি- মাইনরিটি নিয়ে যে জটিলতা থাকবে, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে। উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, পিআর চালু হলে বড় দলগুলো ৪০ শতাংশ পেতে পারে, আবার অন্য কোনো দল ৩০ শতাংশ পাবে এবং ছোট ছোট দল মিলে বাকি ভোটটি ভাগ করবে। তখন সরকার গঠন কিভাবে সম্ভব হবে, সেটা একটি বড় প্রশ্ন। তাঁর কথা, কোথাও কোথাও পিআর ফলপ্রসূ হয়েছে, কিন্তু সব জায়গায় নয়।

এছাড়া মান্না আভাস দিয়েছেন যে, পিআর নিয়ে যে ১৬৬টি বিষয়ের প্রশ্নমালা তারা পেয়েছিল, সেখানে পিআর বিষয়ে সরাসরি কোনো উল্লেখ ছিল না। যারা এখন পিআর নিয়ে তৎপর, তাদের দাবি তালিকায় মূলত পিআর ছিল না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য পুনরাগমন প্রসঙ্গে মান্না বলেন, তারা আগে থেকেই পিআর পক্ষে ছিল। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের আন্দোলনক্ষমতা ও ভোট অংশগ্রহণ এখনো কমেনি। ধরা যাক, তাদের গড় ভোট ধরলে ৩৫ শতাংশ; তা কমে গেলেও ২০ শতাংশ পর্যন্ত থাকতে পারে। এমন অবস্থায় পিআর প্রবর্তনের ফলে তাদের কর্মকৌশল থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা সহজ হবে না।

পিআর নিয়ে জটিলতার কথা তুলে ধরে মান্না বলেছেন, দুই কক্ষে সংসদ, উচ্চকক্ষ-নিম্নকক্ষ কিংবা শুধুমাত্র উচ্চকক্ষে পিআর থাকা—এসব বিষয়ে দলগুলোর ভিন্নমত রয়েছে। বিএনপি বলে দুই কক্ষই প্রয়োজন নেই, আবার জামায়াত পূর্ণ পিআর দাবি করছে। এসব দিক নিয়ে আলোচনার জন্য সময়, ধারণা ও ধৈর্যের প্রয়োজন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, সবকিছু একবারেই ফসলিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

সংলাপ ও অভিজ্ঞতা ঘাঁটলেই পিআরের কার্যকারিতা ও দূরপ্রভাব সম্পর্কে সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে—মত ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হিসেবে এ বার্তা দিয়েছেন মান্না

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *