যেভাবে নিজের সন্তানের হাতেই খুন হলেন নোমানি হুজুর

সারাদেশ

ভোলার কাঁটা এলাকায় মসজিদের খতিব ও মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আমিনুল ইসলাম (নোমানী হুজুর) কে তার বড় ছেলে রেদোয়ান হক (১৭) হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিশদ তুলে ধরেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ফিরলেই দুর্বৃত্তরা নোমানী হুজুরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে—এরকম খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্য ও শোকের ভাষ্য সৃষ্টি হয়ে ওঠে। তল্লাশির পর সঠিক তদন্তে দেখা যায়, ঘটনার পেছনে কাউকে না দিয়ে পরিবারের বহু ক্লেশ ও ব্যক্তিগত বৈরিতার চিহ্ন ছিল। এরপর পুলিশের অভিযানে অল্পদিনের মধ্যেই খুনিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।

গ্রেপ্তারের পর রেদোয়ান পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অকপটভাবে স্বীকার করেছে, সে দীর্ঘদিন অনলাইন গেম ও অসুশৃঙ্খল আচরণে আসক্ত ছিল। ঘরের কঠোর শাসন ও পিতার তিরস্কারের ফলে তার মনে ঘৃণা ও ক্ষোভ জমে—অবশেষে সে হত্যার পরিকল্পনা করে। পুলিশ জানিয়েছে, রেদোয়ান বেশ কয়েক দিন ধরে হত্যার প্রস্তুতি নিয়েছিল; অনলাইনে ধারালো ছুরি অর্ডারও করেছিল। ঘটনার রাতে (৬ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের পরে বাড়ি ফেরেন নোমানী হুজুর। রেদোয়ান কৌশলে দরজায় নক করে পিতা দরজা খুললে ছুরিকাঘাত চালায়। আহত নোমানী প্রাণ ভিক্ষা করেন, কিন্তু সেই অনুনয় রেদোয়ানের হৃদয়ে দয়া জাগাতে পারেনি—ফলত: মাওলানার মৃত্যু হয়। পরে রেদোয়ান বাসা থেকে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর ভোলা জেলায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; স্থানীয় আলেম-উলামা দ্রুত গ্রেপ্তার না করলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন। স্থানীয়রা হতবাক ও শোকাহত। পুলিশ দ্রুত অনুসন্ধান করে রেদোয়ানকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জেলা পুলিশ জানান, ঘটনার মূল কারণ হিসেবে তারা অনলাইনে আসক্তি, পারিবারিক সহযোগিতা না থাকা ও মানসিক চাপ সম্ভাব্য ধরছেন; ঘটনার সব দিক নিয়ে জোরালো তদন্ত চলছে। প্রাথমিক স্বীকারোক্তি ও জব্দকৃত প্রমাণাদি (ছুরি ইত্যাদি) মামলার অন্যতম প্রমাণ হিসেবে আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *