মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ১০ বছর পর খুন, গল্পটা সিনেমার নয়

সারাদেশ

এক দশক আগে এক ব্যক্তি তার মাকে অপমান ও মারধর করেছিলেন। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে পাগলের মতো ওই ব্যক্তিকে খোঁজাখুঁজি করতে এবং প্রতিশোধের তৃষ্ণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তী ১০ বছর ধরে লখনউয়ের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন ওই নারীর সন্তান। এ যেন ঠিক কোনো সিনেমার গল্প। তবে বাস্তবে ছিল নিষ্ঠুর ও বর্বরতার এক প্রতিশোধের কাহিনি।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রতিশোধের গল্প হলো সোনু কশ্যপ নামের ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর এক তরুণের। এই তরুণ মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে লক্ষ্ণৌর রাস্তায় ১০ বছর ধরে সেই মানুষটিকে খুঁজেছেন। ওই ব্যক্তির নাম মনোজ কুমার।

ওই নারীর সেই সন্তানের নাম সোনু কশ্যপ। সোনুর বন্ধুরা খুনের পরিকল্পনায় তার সঙ্গে যোগ দেয়। শুধুমাত্র এই প্রতিশ্রুতিতে যে হত্যার পরে তাদের একটি পার্টি দেওয়া হবে। তারা একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে মনোজকে হত্যা করে। এই ব্যক্তি লক্ষ্ণৌতে ডাব বিক্রি করতেন।

আরও পড়ুনঃ কক্ষপথে রাশিয়ার ‘অস্ত্রবাহী’ স্যাটেলাইট, বিশ্বের জন্য ভয়ানক বার্তা
মনোজকে খুনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। সেই পোস্ট নজরে আসে পুলিশেরও। সেই ছবির সূত্র ধরেই খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ ব্যক্তি হলেন সোনু, রণজিৎ, আদিল, সালামু ও রহমত আলী।

খুনের কাহিনি

প্রায় ১০ বছর আগে মনোজ কোনো একটি ঘটনায় সোনুর মাকে মারধর করেন এবং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। সে সময় থেকেই মনোজের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ নেন সোনু এবং তাকে খুঁজে বেড়াতে থাকেন। সময় পেরিয়ে যায়, কিন্তু সোনু হাল ছাড়েন না। অবশেষে তিন মাস আগে তিনি লক্ষ্ণৌর মুনশি পুলিয়া এলাকায় মনোজকে দেখতে পান। তখনই শুরু হয় পরিকল্পনা।

আরও পড়ুনঃ যানবাহনসহ নদীতে ভেঙে পড়ল সেতু, নিহত ৯
মনোজের রুটিন পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন সোনু। মনোজ কোথায় যান, কখন দোকান বন্ধ করেন—সবকিছু খেয়াল করেন। এরপর তিনি তার চার বন্ধুকে সঙ্গে নেন এবং তাদের বলেন, মনোজকে খুনের পর পার্টি দেওয়া হবে।

গত ২২ মে মনোজ দোকান বন্ধ করেন। এ সময় তিনি একা ছিলেন। সুযোগ বুঝে সোনু ও তার বন্ধুরা লোহার রড দিয়ে তাকে বেদম মারধর করে ফেলে রেখে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনোজ মারা যান।

আরও পড়ুনঃ ইসরায়েলি বাহিনীর কমান্ড-কন্ট্রোলের সদর দপ্তরে যৌথ হামলা, বিধ্বস্ত ট্যাংক
পার্টি

পুলিশের জন্য শুরুতে মামলাটি বেশ জটিল ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে খুনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ছবি পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তাদের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

মনোজকে খুনের পর সোনু তার বন্ধুদের জন্য মদ্যপানের বেশ বড় এক পার্টি দেন। সেই পার্টির ছবি কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। সেখান থেকেই পুলিশ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের শনাক্ত করে।

সিসিটিভিতে দেখা একজনের সঙ্গে মিলে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একজনের ছবির পোশাক। ওই ব্যক্তি খুনের দিন যে কমলা রঙের টি-শার্ট পরেছিলেন, পার্টির ছবিতেও তার গায়ে সেই পোশাক দেখা যায়।

এরপর পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *