দেশে ফেরার জন্য কাঁদছে বাংলাদেশে থাকাভারতীয় দম্পতি

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে পুশইনের শিকার ভারতীয় এক দম্পতি। দিল্লি থেকে আটক করে তাদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তাদের দাবি তারা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ দেওয়ার পরও পুলিশ তাদের ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় ওই দম্পতি দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এর হস্তক্ষেপ কামণা করেছেন।

জানা গেছে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কিছুদিন আগে ওই ভারতীয় দম্পতিকে বাংলাদেশে পুশইন করে। সেই দম্পতি এবং তাদের পরিবার তথ্য-প্রমাণসহকারে দাবি করেছে, দানিশ শেখ ও সোনালি খাতুন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা।

কিন্তু দিল্লি পুলিশ তাদের প্রমাণাদি গ্রহণ না করে বিএসএফের মাধ্যমে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই দম্পতির সঙ্গে আরও তিনজনকে বাংলাদেশে পুশইন করা হয়।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে জানা যায়, পুশইনের শিকার হওয়া ওই দম্পতির নাম দানিশ শেখ ও সোনালি খাতুন। তারা পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার পাইকরের স্থায়ী বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, দিল্লিতে কাজের উদ্দেশে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সেখানে দিল্লি পুলিশ তাদের বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে সন্দেহ করে ১৮ জুন গ্রেপ্তার করে। তাদের সঙ্গে সুইটি বিবি নামের এক নারী ও তার দুই শিশুপুত্রকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে ২৬ জুন কোনো শুনানি বা তদন্ত ছাড়াই বিএসএফের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে দুটি হেবিয়াস কর্পাস পিটিশন দাখিল করা হয়েছে।

ভিডিও বার্তায় কাঁদতে কাঁদতে সোনালি ও সুইটি জানান, তাদের কাছে আধার কার্ডসহ যাবতীয় ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র ছিল। কিন্তু দিল্লি পুলিশ সেসব নথি আমলে না নিয়ে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এমনকি তাদের শারীরিক নির্যাতনও করা হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।

ভিডিওতে দেখা যায়, দুই নারী তাদের সন্তানদের কোলে নিয়ে চোখের পানি ফেলছেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বারবার আবেদন জানাচ্ছেন—‘আমরা বাংলাদেশি নই, আমরা বীরভূমের মানুষ। দিদি, আপনার কাছে হাতজোড় করে বলছি—আমাদের ফিরিয়ে নিন। আমাদের কাছে কিছু নেই, খাওয়ারও সামর্থ্য নেই। আমাদের সন্তানদের দয়া করুন।’

এ ঘটনায় ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ঘটনা তদন্ত ও ভুক্তভোগীদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবিও উঠছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *