দেড় ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে গেল গ্রামবাসী

সারাদেশ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রক্টর স্যার আক্রান্ত হয়েছে শুনে আমরা ওনাকে উদ্ধার করতে যাই। গ্রামবাসী প্রক্টর স্যারসহ ১০/১৫ জনকে মারধর করতে থাকে। আমরা একপর্যায়ে নিজেদের বাঁচাতে দৌড় দিই। আমরা দুজন দৌড়ে গ্রামের কয়েকটা বাড়ির দিকে গেলে গ্রামবাসী চারদিক থেকে আমাদের ঘিরে ধরে। দেড় ঘণ্টা ধরে চলে তাদের মারধর। এর মধ্যে দুবার অজ্ঞান হয়ে যাই। প্রথমবার অজ্ঞান হওয়ার পর মৃত ভেবে ফেলে যায়। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে আবার মারা শুরু করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। আমরা দৌড়ে ক্ষেতের মধ্যে পালাতে চাইলে সেখানেও মারে।’

রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের মেঝেতে শোয়া অবস্থায় স্থানীয়দের হামলার বর্ণনা দেন চবির এ শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ভাড়া বাসার দারোয়ানের সাথে কথাকাটাকাটির জেরে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, বেশ সাংবাদিক ও অন্তত ১৮০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদেরই একজন সাইফুল ইসলাম।

আরও পড়ুনঃ মনোনয়ন পাচ্ছেন না বিএনপির যে সব হেভিওয়েটের নেতারা!
তিনি বলেন, ‘মারধরের একপর্যায়ে তারা মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তাদের পায়ে ধরে ফোনটি উদ্ধার করি।’

ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয়রা এলোপাথাড়ি ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে আমার মাথা ফেটে যায়। কয়েকটা সেলাই করতে হয়েছে।’

এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ শেষে বিকেল ৪টার দিকে অভিযানে নেমেছে যৌথবাহিনী। এ সময় ক্যাম্পাসের আশপাশে যৌথবাহিনীর অন্তত ১০টি গাড়ি প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা সংঘর্ষ চললেও এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *