তালাকের পর যা জানালেন আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহার

সারাদেশ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করা ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান ও তার প্রাক্তন স্ত্রী

সাবিকুন নাহারের মধ্যকার পারিবারিক দ্বন্দ্বের অবশেষে অবসান ঘটেছে। ওলামায়ে কেরামের মাশওয়ারায় শরিয়াহ অনুযায়ী তাদের পারিবারিক বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুজনই।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) নিজেদের ফেসবুক স্ট্যাটাসে সমাধান হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আবু ত্বহা আদনান ও সাবিকুন নাহার।

আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের পেজ থেকে জানানো হয়, আলেমদের উপস্থিতিতে তিনি তার প্রাক্তন স্ত্রীকে ‘খুলা’ তালাকের প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন, যার মাধ্যমে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক চূড়ান্তভাবে ছিন্ন হয়ে যায়।

১। ‘মুরুব্বি ওলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে মুহতারাম আবু ত্ব-হা আদনান তার প্রাক্তন স্ত্রীকে খুলা তালাকের প্রস্তাবনা দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন। এমতাবস্থায় তাদের মধ্যে বর্তমান কোনো বৈবাহিক সম্পর্ক অবশিষ্ট নেই।’

২। ‘বিয়ের সম্পূর্ণ মোহরআনা পূর্বেই পরিশোধ করা ছিল। এবিষয়ে কোনোরকম আলোচনা ও দেনা-পাওনা বাকি নেই আলহামদুলিল্লাহ।’

৩। তিনি (সাবিকুন নাহার) মিরপুর ঢাকাস্থ Taw Haa Zin Nurain Islamic Center এর উন্নয়ন প্রকল্পে গত বছর প্রায় ৫ ভরি এবং অন্যান্য কিছু খাতে (তার ভাষ্যমতে) আরও প্রায় তিন ভরি স্বর্ণ ও নগদ অর্থ প্রতিষ্ঠানকে ফেরতযোগ্য ধার হিসেবে প্রদান করেছিলেন, যা বিগত মাজলিসে তিনি তার প্রাক্তন স্বামী আবু ত্ব-হা আদনান সাহেবের কাছে দাবি করেন।

‘ওলামায়ে মাজলিস এগুলো পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এবং উভয় পক্ষই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। এই অর্থ তার শারঈ হক্ব তাই প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পরিশোধে সচেষ্ট আছে। এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৮ ভরি স্বর্ণের বিনিময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের যে গুজব রটানো হয়েছে তা সত্য নয়।’

‘উস্তাদ আবু ত্বহা আদনান ও তার প্রতিষ্ঠানের সাথে উক্ত গুজব প্রচারণার কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। অনুগ্রহ করে আপনারা কেউ কোন প্রকার গুজবে প্রভাবিত হবেন না এবং কারও প্রতি কোন মিথ্যে অভিযোগ বা অপবাদ আরোপ করবেন না।’

৪। বাচ্চাদের বিষয়ে মুরব্বিদের মাজলিসে শরিয়াহ সম্মতভাবে ফয়সালা প্রদান করা হয়েছে, উভয় পক্ষই মাজলিসের উক্ত ফয়সালা সর্বসম্মতিক্রমে মেনে নিয়েছেন।

৮-১০টা বিয়ে হওয়া কোনো অন্যায় নয়: মুফতি কাশেমী
‘বিষয়টি ওয়ালামের মাজলিসের পরামর্শক্রমে পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। তাই এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা না করার জন্য আমরা সকলের নিকট বিনীত অনুরোধ করছি।’

অন্যদিকে সাবিকুন নাহার তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামি-ন। সম্প্রতি আমার পারিবারিক যে ইস্যুটি সর্বসাধারণের সামনে এসেছে; ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে তার অত্যন্ত সুন্দর ও উত্তম মীমাংসা হয়েছে।

তিনি বলেন, দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের উদ্দেশ্যে পারিবারিক জটিল পরিস্থিতি থেকে সহজ, সরল ও সুন্দর প্রতিকারের আশায় আমাকে চূড়ান্ত এক ভীতিপ্রদ দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই সংশ্লিষ্ট ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের নজর আকর্ষণ করে অতঃপর এ সমাধান পেতে হয়েছে।

সাবিউকুন নাহার আরও বলেন, এ প্রক্রিয়ায় পাবলিক প্ল্যাটফর্মে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়, আবেগে, অনিশ্চয়তায়, আমার দ্বারা যত গুনাহ হয়েছে তা থেকে আমি রবের দরবারে প্রকাশ্যে তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। নিশ্চয়ই তিনি রহমান, তওবা কবুলকারী এবং ক্ষমাকারী।

এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আমি নিজেও পরবর্তীতে এ বিষয়ে কোনো ধরনের কথা বলা থেকে বিরত থাকব এবং সরাসরি এ ইস্যুটিকেই মেনশন করে যারা আলোচনা, সমালোচনায় লিপ্ত এমন সর্বস্তরের আলোচক ও সমালোচকদেরও বিরত থাকার অনুরোধ করছি।

সবশেষ নিজের প্রতিটি অডিও ও ভিডিও ক্লিপ ডিলিট করার আহ্বান জানিয়ে মিডিয়ার উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, আর আল্লাহর ওয়াস্তে পরকালের স্বার্থেই পারিবারিক আলোচনা সংবলিত আমার প্রতিটি অডিও, ভিডিও ক্লিপ ডিলিট করার জন্য সব মিডিয়ার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। এ কঠিন সময়ে যারা পাশে ছিলেন, আছেন, ভালোবেসেছেন তাদের প্রত্যেককে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং যারা ঘৃণাভরে তিরস্কার/নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন মালিক তাদের ক্ষমা করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *