বিশ্ব রাজনীতিতে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল দক্ষিণ কোরিয়া। একজন ট্রেনচালককে দেশটির শ্রমমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে নতুন সরকার। ব্যতিক্রমী এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। নতুন শ্রমমন্ত্রী হলেন কিম ইয়ু-জিন। যিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ট্রেনচালক হিসেবে কাজ করেছেন। শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তার মন্ত্রী হওয়ার ঘটনা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
চলতি বছরের ৩ জুন অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রক্ষণশীল প্রার্থী কিম মুন-সুকে হারিয়ে বামপন্থি লি জে-মিয়ং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সরকার গঠনের পর তিনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শ্রমজীবী মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কিম ইয়ু-জিনকে শ্রমমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।
প্রেসিডেন্ট লি বলেন, যারা শ্রম দিয়ে দেশ গড়েন, তাদের নেতৃত্বেও সুযোগ পাওয়া উচিত। কিম ইয়ু-জিন সেই আদর্শের প্রতীক।
নতুন শ্রমমন্ত্রী বলেন, আমি শ্রমজীবী মানুষের কণ্ঠস্বর হতে চাই। নীতিনির্ধারণে শ্রমিকদের অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতা তুলে ধরবো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে এই ধরনের পদক্ষেপ বড় পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। এটা প্রমাণ করে, জনগণের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব উঠে আসতে পারে।
২০তম ও ২১তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লি জে মিয়ংকে সহযোগিতা করেছিলেন কিম ইয়ং-হুন। প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আশা করি, তিনি (হুন) দুর্ঘটনা হ্রাস, হলুদ খাম আইন সংশোধনসহ ৪ দশমিক ৫ দিনের কর্মসপ্তাহ বাস্তবায়নসহ শ্রমজীবী মানুষের অধিকার শক্তিশালীকরণে ভূমিকা পালন করবেন।
হুন কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করার পর ১৯৯২ সালে কোরিয়া রেলরোড কর্পোরেশনে যোগদান করেন এবং রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০০০ সালে কোরিয়ান রেলরোড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের বুসান শাখার প্রধান হিসেবে শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন।হুন ২০০৪ সালে কোরিয়ান রেলরোড ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কোরিয়ান কনফেডারেশন অফ ট্রেড ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৭ সালে জাস্টিস পার্টিতে (বর্তমানে ডেমোক্রেটিক লেবার পার্টি) যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি।